শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে প্রাণ গেল ২ জনের ◈ ক্ষণজন্মা নক্ষত্র সালমান শাহ: প্রয়াণের ২৯ বছরেও অম্লান স্মৃতিতে, জনপ্রিয়তায় এখনও সবাইকে ছাড়িয়ে ◈ মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন নিয়ম ◈ লক্ষ্মীপুরে যাত্রীবাহী বাস খালে পড়ে নিহত ২ ◈ নুরাল পাগলার কবরকেন্দ্রিক সংঘর্ষ: পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরে ৩,৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা ◈ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কেন? ◈ এবার গণঅধিকার পরিষদকে নিষিদ্ধ করার দাবি জাতীয় পার্টির মহাসচিবের ◈ কক্সবাজা‌রের নাফ নদীতে আরাকান আর্মির তৎপরতা, জেলে নিখোঁজ, কী হচ্ছে সেখানে? ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন: এক বছরে মন্দা থেকে শীর্ষে বাংলাদেশ ◈ শনিবার সাধারণ ছুটি : কারা পাবেন, কারা পাবেন না

প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:৩৩ দুপুর
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শার্শা-বেনাপোলে বিগত সরকারের ১৫ বছরে ১৬০ জন হত্যা

আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি:  যশোরের শার্শা উপজেলাতে গত ১৫ বছরে আ,লীগের শাসনামলে দলীয় প্রভাব বিস্তার,ঘাট-বাওড় দখল,মাদক কারবার,পারিবারিক কলহসহ নানান অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে ১৬০ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। খুনের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা,ব্যবসায়ীও সাংবাদিক রয়েছে।  

এ ঘটনায় উপজেলাধীন শার্শা থানায় ৭৩  টি ও বেনাপোল বন্দর থানায় ৮৭ টি মামলা হয়। মামলায় অন্তত ৩০০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে আসামিদের প্রায় সবাই এখন কারাগারের বাইরে। একদিকে  প্রিয়জন হারানো ব্যাথা অন্যদিকে বিচার না পাওয়ায় একযুগ পরে এসেও এখনো ঢুকরে ঢুকরে কাঁদেন স্বজনরা।

খুনিরা জামিনে ফিরে চোখের সামনে ঘুরে বেড়ানোয় জমানো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে পুলিশ বলছেন, অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া সহিংসতা  এড়াতর তারা মানুষকে সচেতন করছেন। আর মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন,  সামাজিক অবক্ষয় ও আইনের সু শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় এ  অপরাধ বাড়ছে।  

তথ্য বলছে,শার্শা উপজেলাতে হত্যার শিকার ১৬০ জনের মধ্যে ৭৭ জন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী, বিএনপির ২৬ জন, সাংবাদিক ১ জন ও মাদক ব্যবসা ও পারিবারিক কলহসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫৬ জন নারী,পুরুষ ও শিশু  প্রতিপক্ষের হাতে হত্যা হয়।

জানা যায়, যশোর শহর থেকে  ৩৪ কিলোমিটার দূরে  ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত এই শার্শা উপজেলা। এ অঞ্চলে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দরটি গড়ে উঠায় বন্দরের নিরাপত্তা জনিত কারনে শার্শা থানার পাশাপাশি  ২০০১ সালে বেনাপোল পোর্টথানা নামে আরেকটি থানা গড়ে ওঠে। একদিকে সীমান্তের সবচেয়ে বড় বানিজ্যিক এলাকা অন্যদিকে চেরাচালান রুট হওয়ায় অপরাধ প্রবন এলাকা হিসাবেও পরিচিত।

২০০৯  এ আ,লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্দর,ঘাট,বাওড় ও গরু খাটাল দখল নিয়ে প্রভাব বিস্তারে দ্বন্ধে  বেশি হত্যার শিকার হয় আ,লীগের নেতা,কর্মীরা। প্রতিশোধ ও আক্রশ  মুলকও হত্যা হয় বিএনপির অনেক নেতা,কর্মীদেরকে। খুনিদের ভয়ে মৃত্যু ব্যক্তিকে এক নজর দেখা বা দাপনের  অধিকার টুকুও হারিয়েছিল বিএনপির পরিবারের অনেক স্বজনেরা। তবে এসব ঘটনায় পুলিশে মামলা হলেও ন্যায় বিচার পায়নি অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের। আসামীরা ছাড়া পাওয়ায় ক্ষোভও রয়েছে তাদের। তবে সরকার পরিবর্তনে এবার ন্যায় বিচার নিয়ে পুনরায় তারা স্বপ্ন দেখছেন।

 ভারত সীমান্তবর্তী শার্শার কনেদাহ আতঙ্কের একটি গ্রাম। কেবল বিএনপি করার অপরাধে আক্রশ মুলক গেল ১৫ বছরে  শার্শার কনেদাহ গ্রামে একই পরিবারের ৫ বিএনপি নেতা,কর্মী খুন হয়। সবশেষ খুন হয় বিএনপি কর্মী মুকুল, এর আগে বেনাপোল হত্যা হয় মুকুলের বাবা বিএনপিকর্মী আব্দুল আজিজ। বাড়ির উঠানে কবর দেওয়া হয় আজিজের। পরে খুন হয় আজিজের চাচা নুর ইসলাম মেম্বার, খুন হয় হয় মুকুলের চাচা মুজাম গাজী।

কনেদাহ গ্রামের নুরইসলাম গাইনের ছেলে রোকনুজ্জামান জানান, আ,লীগ সেকারের আমলে ন্যায় বিচার পাইনি। বর্তমান সরকারের কাছে বিচার চাই।

২০১৫ সালে  আক্রোশ মুলক আ,লীগের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা  করে পুটখালি ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সেত্রেটারী আব্দুল খালেককে। সে আসামীরাও সব ছাড়া পেয়েছে জামিনে। 

পুটখালী গ্রামের হত্যার শিকার যুবদল নেতা খালেকের  ছেলে আহসান হাবিব লিটন পিতা হত্যার ন্যায় বিচার চায় বর্তমান অন্তবর্তীকালিন সরকারের কাছে।

২০২২ সালের ১০ মে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে আ,লীগের  হাতে হত্যার শিকার হয় আ,লীগ নেতা মগরআলী, দাদাকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হয় নাতি ইয়াসিন।  

নিহত আ,লীগ নেতা মগর আলীর স্ত্রী জানান, আসামী গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে  মহড়া দেয় বাড়ির সামনে।  হত্যাকারীদের দাপটে বাড়ি,ঘর ছেড়ে  ছেলেরা  এলাকা ছাড়া। ভিটা বাড়িতে অসহায়ের মত কেবল আমি পাহারা দিচ্ছি। 

মানবাধীকার সংস্থ্যা রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষনো মল্লিক  জানান, সামাজিক অবক্ষয় ও আইনের সু শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় হত্যার মত  অপরাধ দিন দিন বাড়ছে।

শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল আলিম ও বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ওসি রাসেল মিয়া জানান, তারা কয়েকদিন হলো যোগদান করেছেন।  তবে ইতিপূর্বে যেসব হত্যা  মামলা দায়ের হয়েছে অনেক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  পলাতক আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।  অপরাধ মুলক যে কোন ঘটনা এড়াতে মানুষকে সচেতন করতে  কাজ  করছে তারা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় মানুষের সহযোগীতা কামনা করেন প্রশাসনের এই দুই কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়