মারুফ মালেক: বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বনানীস্থ পারিবারিক বাসা থেকে অর্পিতা কবির মুমুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। সুইসাইড নোট দেখে পুলিশ ধারণা করছে, হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
জানা গেছে, অর্পিতা লন্ডনে থাকতেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অর্পিতার মা মারা যান। এরপর তিনি দেশে ফিরেন। সম্প্রতি লন্ডনে তার বিয়ের জন্য এক পাত্র ঠিক করা হয়েছে। এ জন্য ব্রিটিশ হাইকমিশনে তিনি কাগজপত্র জমা দেন। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনে তার সাক্ষাৎকার ছিল।
কিন্তু বুধবার দুপুরে লন্ডনে তার হবু বর হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন। এ খবর অর্পিতা জানার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বাবা শাহরিয়ার কবির ও ভাই দ্বীপ তাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
সর্বশেষ বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শাহরিয়ার কবির তার মেয়ের বেডরুমে গিয়ে সান্ত্বনা দেন এবং ঘুমিয়ে পড়তে বলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত অর্পিতার বেডরুমের দরজা বন্ধ দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা। সকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনে অর্পিতার যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য তার ছোট ভাই দ্বীপ বেডরুমের দরজায় নক করেন। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দ্বীপ বাহির থেকে চাবি দিয়ে দরজা খোলেন। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে বাথরুমের বাথটবের ওপর জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় অর্পিতাকে ঝুলতে দেখেন। পরে পুলিশকে খবর দেয় পরিবারের সদস্যরা।
বনানী থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, তার বেডরুমের টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটি সুইসাইডাল নোট উদ্ধার করে পুলিশ। নোটে অর্পিতা জীবন নিয়ে অনেক হতাশার কথা লিখেছেন। বিশেষ করে তার হবু বরের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর খবরটি জীবনের সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে তার বাবা শাহরিয়ার কবিরের সঙ্গে কথা বলেছিলাম।
শাহরিয়ার কবির পুলিশকে জানান, হবু বরের মৃত্যুর খবর পেয়ে অর্পিতা কান্নায় ভেঙে পড়ে। তাকে আমি অনেক সান্ত্বনা দিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটা বড্ড অভিমানী। মায়ের মৃত্যুর পর সে একবার ধাক্কা খায়। এ দফায় তার হবু বরের মৃত্যুর খবরটি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
এসআই/এসএ