শিরোনাম
◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: অনলাইনে জুয়া বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২৩, ০৫:৪৬ বিকাল
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২৩, ০৫:৪৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজশাহীতে ছোট ভাইকে হত্যার চেষ্টা, নারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

ইফতেখার আলম, রাজশাহী: সম্পত্তির লোভে একমাত্র ছোট ভাইকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সিআইডির সাব-ইন্সপেক্টরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এম সুলতান আহমেদ (৩৮) নামের রাজশাহী আঞ্চলিক কর অফিসের ষ্টেনো (মুদ্রাক্ষরিক)। তিনি রাজপাড়া থানাধীন ডিংগাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এম সুলতান আহম্মেদ বাদি হয়ে গত ১ জুন বোন ও দুলাভাইসহ মোট ৬ জনের নাম উল্লেখ করে রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। মামলাটি গত ৫দিন আগে হলেও বিষয়টি জানাজানি হয় মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে।

মামলার আসামিরা হলেন, চন্দ্রিমা থানার শিরোইল কলোনী এলাকার মামুনুর রশিদের স্ত্রী শামীমা বেগম সুইটি (৪৪)। তিনি বাংলাদেশ পশ্চিম রেলওয়ের সিপিও অফিসে চাকরি করেন। তাকেই করা হয়েছে প্রধান আসামি। ২ নং আসামি সুমাইয়া বেগম লাকী (৩৯)। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে রাজশাহী সিআইডিতে কর্মরত আছেন। ৩ নং মোহনপুর থানার বিদিরপুর বসন্তকেদার এলাকার নুরুন্নবী চাঁদের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম হ্যাপি (২৫)। ৪ নং মামুনুর রহমান (৫০)। তিনি বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীতে চাকরি করেন। ৫ নং নুরুন্নবী চাঁদ (৩০), তিনি রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরি করেন ও তার বড় ভাই নুরুল ইসলামকে করা হয়েছে ৬ নং আসামি।

উল্লেখ্য বাদী-বিবাদীরা উভয় আপন ভাই-বোন ও দুলাভাই। ৫ বোনের একমাত্র ছোট ভাই সুলতান আহমেদ।

সুলতান আহম্মেদ এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২৬ মে মোহনপুর থানার মৌগাছি বিদিরপুর বসন্তকেদার এলাকায় ছোট বোন হ্যাপির স্বামী নুরুন্নবী চাঁদ পারিবারিক অশান্তির কথা বলে তাকে বাসায় ফোন করে ডাকেন। বোনের কথা ভেবে সরল বিশ্বাসে তাদের বাসায় যায়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এক এক করে সেই বাসায় হজির হন মেজো বোন সুইটি, তার স্বামী মামুনুর রশিদ ও লাকী। এরপর বিকেল ৪টার দিকে তারা সকলে একত্রিত হয়ে ব্যাপক মারধর করে সুলতান আহমেদকে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে ভুক্তভোগী সুলতান আহমেদ প্রতিবেদককে জানান, রাজশাহী নগরীর ডিংগাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকায় তার বড় বোন সাহানাজ বেগম বিউটির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তাদের নামে না লিখে দেয়ায় আমাকে ব্যাপক মারধর করে। একপর্যায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সুইটির স্বামী মামুনুর রহমান সুলতানের বুকের ওপর উঠে চেপে ধরে। অন্যদিকে ৩য় বোন লাকী তার পড়নের ওড়না গলায় ফাঁস দিয়ে টান দেয়। এতেও ব্যার্থ হলে পানির সাথে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেস্টা করে তারা। এ সমস্থ ঘটনা একমাত্র সুইটির পরিকল্পনায় এবং প্রকাশ্যে হুকুম দিয়ে ঘটনো হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন সুলতান আহমেদ।

পরবর্তিতে ১০০ টাকার ননজুডিসিয়াল ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে সুলতান আহমেদের স্বাক্ষরও করিয়েনেন বিবাদিরা। এবাদেও তার একটি পালসার মোটরসাইকেল, মানিব্যাগে থাকা ২০ হাজার টাকা, এটিএম কার্ড ও মোবাইলও ছিনিয়ে নেয় তারা। বিষয়টি পারিবারিক ঘটনা ও মানুষিক প্রতিবন্ধী ধারণা করে স্থানীয়রা তেমন গুরুত না দেওয়ায় ওই দিন রাত ৩টা পর্যন্ত ধারাবাহিক নির্যাতন চলে এম সুলতান আহমেদের ওপর।

সুলতান আহম্মেদ বলেন, বড় বোন সাহানাজ বেগম বিউটি তিনি ঢাকায় কাস্টমস অফিসের নির্বাহী অফিসার পদে চাকরি করতেন। ডিংগাডোবা ব্যাংক কলোনি এলাকায় সাড়ে ৩ কাঠা জমির ওপর দুই ইউনিটের একটি বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। উক্ত বাড়িটির অধ্যেক আমার নামে এবং বাকি অংশ নিজের নামে রাখেন। এছাড়া নগদ ২০ লাখ টাকা রেখে যান আমার কাছে। এরই মধ্যে ২০১৮ সালে ঢাকার একটি ফ্লাট বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই কাস্টমস কর্মকর্তা। রেখে যাওয়া দুই ইউনিটের ২য় তলা বাড়ি ও ২০ লাখ টাকা যেন কাল হয়ে দাড়িয়ে যায় আমার বোন ও দুলাভাইদের কাছে।

ভুক্তভোগী সুলতান আহমদের শশুর ইকবাল আহমেদ বলেন, পাঁচ বোনের একমাত্র ভাই সুলতান আহমেদ। বাবা মৃত্যুর পর বড় বোন তাকে কোলে পিঠে মানুষ করেছেন। বড় বোনের কাছে খুব আদরের ছিলেন সুলতান আহমেদ। ডাক্তার জান্নাতুল নাইম বেবী বাদে রাজশাহীতে যেসকল বোন ও দুলাভাই রয়েছে তারা সকলে মিলে একজোট হয়ে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে জামাইকে বাড়ি থেকে বেদখল করতে। সেজো বোন লাকী তিনি পুলিশে চাকরি করার সুবাদে ব্যাপক প্রভাব খাঠাচ্ছেন। এছাড়া স্থানীয় গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে হামলাও করিয়েছেন জামাই সুলতানের ওপর। দিয়ে যাচ্ছেন একেরপর এক হুমকি। এবাদেও রাজপাড়া থানায় আমার জামাইসহ আমার নামের দিয়েছেন চুরির মিথ্যা মামলা। অন্যদিকে ছোট বোন হ্যাপির শশুর বাড়ি মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তকেদার গ্রামে। তার স্বামীর নাম নুরুন্নবী। তার বাসায় পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার জামাইকে ডেকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। আমার মেয়ের ওপরও তারা তিন বোন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।

এ ব্যাপারে মৌগাছি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মেজর আলী বলেন, ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে আমি একটি বিশেষ কাজে বাইরে যাচ্ছিলাম। এসময় নুরুন্নবীর বাসায় ব্যাপক হট্টগোলের আওয়াজ শুনতে পায়। ঘটনাস্থল গিয়ে দেখি সুলতান মাটিতে গড়াগড়ি করছে। বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তাদের একজন জানায় সুলতান তাদের আপন ছোট ভাই। সে একজন মানুষিক প্রতিবন্দী। সুলতানকে মাটি থেকে তুলে বিস্তারিত শুনার চেষ্টা করছিলাম এসময় সুলতানের দুলাভাই মামুন তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। পরে তাদের মধ্যে একটি আপোষ মিমাংশা করে দিয়ে আমি চলে আসি। এছাড়া আমি তারাহুরার মধ্যে ছিলাম। এ মামলার ব্যাপারে সুমাইয়া বেগম লাকী বলেন, আমি পুলিশ হাসপাতালে আছি। যা কিছু জানার আমার আম্মার কাছে জানুন বলে ফোন কেটে দেন। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

প্রতিনিধি/জেএ/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়