রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামের এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তরফে এ তথ্য জানানো হয়।
চারজনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারেক রহমান রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুই আসামিকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে মর্মে পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। যদিও তাদের নামপরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
বুধবারের ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ডিএমপি জানায়, মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের ধরতে পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে।
ঘটনার সময় অদূরেই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চলছিল এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আনসার ক্যাম্পের সদস্যরা। তবে আতঙ্কে কেউই এগিয়ে আসেননি। পরে সোহাগকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি আগেই মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, মিডফোর্ডের ৩ নম্বর ফটকের ভেতর থেকে প্রায় বস্ত্রহীন ও রক্তাক্ত এক যুবককে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনছেন দুই যুবক। কালো প্যান্ট পরা খালি গায়ের এক তরুণ তাঁর গালে চড় মারছেন। কালো গেঞ্জি পরা আরেকজন এসে বুকের ওপর লাফাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে একই কাজ করছেন। আরেকজন এসে তাঁর মাথায় লাথি মারেন। একপর্যায়ে বড় পাথর দিয়ে বারবার তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়।
আজ শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত সোহাগের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেপ্তার করে। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও পুরোনো শত্রুতার ইঙ্গিত মিলেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দুজনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।