তপু সরকার, শেরপুর : উৎসবমুখর পরিবেশে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর মাঠে ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার জেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। শহরতলীর সর্বত্রই শোভা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় আঃলীগ নেতাদের ছবি সম্বলিত তোড়ন, ফেস্টুন, বিলবোর্ড এবং ব্যানার নির্মান।
বাংলাদেশে ৬৪ জেলার মধ্য শেরপুর জেলা সর্ব শেষে ঘোষণা হলেও এখানে অনেক গুনিজন ব্যক্তিদের জন্ম হয়েছে । যেমন শের আলীর শেরপুর ,শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক্ । জেলা এবং সম্মেলনের মাঠ দুজন গুনি ব্যক্তির নামে এ প্রবীন নেতাদের মধ্যে আহ্ছান আলী মাস্টার , এডভোকেট আঃ ছামাদ , মোঃ নিজাম উদ্দিন আহাম্মেদ, এডভোকেট আনিসুর রহমান মোঃ মোজাম্মেল হক ,বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর মোঃ মুজিবর রহমান মোঃ মাজহারুল হক হেলাল সাহেব। তাদের মুত্যুর পর শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ এর গার্ডিযান শূণ্যে হয়ে যায় ।
তারা সবাই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধে চেতনায় বিশ্বাসী । তাদের পরিবারের সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত হয়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরে রেখেছেন । গত পচিশ বছর যাবৎ হুইপ আতিউর রহমান আতিক (এমপি) তাদের সাথে নিয়ে জেলার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন ।
এরই মধ্য গত ছয় বছর আগে পৌর নির্বাচন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগে মধ্য দুটি বিবাধ মান দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় । একটি গ্রুপে সাবেক পৌর মেয়র ও বতমার্ন্ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু,ও দুই বারের কামারেরচর জনপ্রিয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানও শেরপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলে একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন ।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি ও এডভোকেট চন্দন কুমার পাল সহ ৯০শতাংশ নেতাকর্মী নিয়ে শান্তিপূর্ন্ ভাবে চলে আসছে শেরপুরের আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অঙ্গন ।
দলের ভেতরে ভেতরে দণ্ড থাকলেও সবার রাজনৈতিক মতাদর্শে এক ,শুধু রাজনৈতিক কর্মকান্ড গুলি আলাদা করা হয় ।
ক্ষমতার ১৫ বছরে দু’পক্ষের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে দলের ভিতরে কিছু স্বাধীনতা বিরোধী এবং মুক্তিযোদ্ধের চেতনাকে কোনো ভাবেই বিশ্বাস করেন না, শ্বিকার করে না; মুক্তিযোদ্ধ কে এখনো তারা বলে ১৯৭১ মুক্তিযোদ্ধ হয়নি ,হয়েছে পূব ও পশ্চিম পাকিস্তানের দি’খন্ডিত করার একটি যুদ্ধ ।
বিএনপি, জামাত ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগের দু’সময়ে এ সমস্ত প্রেতাত্বাদের ভয়ে রাতের পর রাত আওয়ামীলীগের কর্মীরা বিভিন্ন মজাপুকুর থেকে শুরু করে লেট্রিনে পালিয়ে থেকেছেন ও বিনা কারনে মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছেন । তাদের সন্তারা বতর্মান আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপে ঢুকে তরাই এখন প্রতিষ্ঠিত আওয়ামীলীগ ।
প্রতিষ্ঠিত নব্য আওয়ামী লীগ দু, দিকেই উস্কানীদিয়ে দল কে বিভক্ত করে রেখেছেন । আওয়ামী লীগের একাদিক মাঝারি সারির নেতারা বলেন , এরা দিনের বেলায় পূর্বে থাকলেও রাতের বেলায় পশ্চিমে গিয়ে সুন্দর করে তৈল মেখে পূর্বের বিরুদ্ধে উস্কানী দিয়ে তাদের সুবিধা গ্রহন করে । ঠিক পরের ঘটনায় একই অবস্থা পশ্চিমের কথা পূর্বে লাগিয়ে মাশাল্লাহ্ পালিশ মুখি হয়ে দন্ড আরো শক্ত করে । এভাবেই শেরপুরের জেলা আওয়া মীলীগে চলছে স্নায়ু যদ্ধ ।
জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম এবং দ্বিতীয় সারির প্রায় নেতাই দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্ন সেক্টর দখল নিয়ে লুটতারাজ করে হয়েছেন টাকার কুমির । কারো প্রয়াত এরশাদ শিক স্বর্ণ্ কোমল, কারো অত্যাধুনিক ডুপলেক্স বাড়ী , দুটি /তিনটি করে গাড়ী । অনেকের পরিবারের চার সদস্যের মধ্য তিনটি গাড়ী, অত্যাধুনিক বিলাশ বহুল বাড়ী ।
এদের মধ্য অনেকে রয়েছেন ফাটাকেষ্টর (চন্দ্র-বিন্ধুর মত), অন্যের উপর ভর করে চলে এবং নিজের অন্ধকার ঢাকতে অন্যের ভাল দেখতে পারেন না । এ অবস্থায় আগামী ৮ ডিসেম্বর শেরপুর জেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ।
কে হচ্ছেন সভাপতি-সাধারন সম্পাদক ? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা না থাকলেও সভাপতি শেরপুরের সাধারন মানুষের বেশ কাছের এবং প্রিয় মানুষ এমপি আতিক । বিশেষ করে আঃলীগের একাদিক নেতারা বলেন ৫ বারের এমপি দুই বারের জাতীয় সংসদের হুইপ ,বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আতিউর রহমান আতিক।
তিনি শেরপুরের শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজে বানিয়ে মানুষের কর্মসংস্থানের পথ তৈরী করেছেন এবং গত পচিশ বছরে ঢাকায় পার্লামেন্টের পর যে সময়টুকু পেয়েছেন তার বাকী সময়টুকু শেরপুরের ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের খোজঁ খবর নিয়েছেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যেদের বিভিন্ন তদবির নিয়ে ব্যস্থ সময় পার করেছেন ।
আওয়ামী লীগের প্রায় নেতাকর্মীদের ভাষ্যমতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিক ছাড়া প্রার্থী খুজেঁ পাওয়াই কঠিন ! আবার অনেকে মনে করেন সভাপতি পদের ওজন ধরে রাখার মত তিনি (আতিক)ছাড়া অন্যকোন লোক সৃষ্টি হয়নি এখনো । সাধারন মানুষ বলেন ক্ষমতাশীন দলের জেলার সভাপতি অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি তার অনেক গুনে অধিকারী হতে হয় । বর্তমান ডিজিটাল যুগে মানুষের যোগাযোগের বড় পথ মোবাইল ।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ অনেক প্রথম সারির নেতা রয়েছেন, কর্মীরা মহাসমস্যায় পড়ে শত বার ফোন করে পাওয়া না গেলেও , রাতের তিনটায় ফোন দিলে হুইপ আতিক কে পাওয়া যায় বলেও মত প্রকাশ করেন ।
সম্মেলনে প্রতিযোগী সভাপতি-ও সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থীদের প্রায় সকলেই রাজপথ কাঁপানো দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতা।
জানা গেছে, জেলা আ’লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউরহমান আতিক এমপি এবং জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আওয়ামীলীগের দুঃসময়ের ত্যাগী ৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদকারী ও কারা বরণকারী নেতা এডভোকেট চন্দন কুমার পাল।
শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক-এবং ক্লিন-ইমেজ পরিছন্ন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত দুই বারের সফল পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া লিটন,শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের ৯০/৯৬ সালে পরবর্তী দুঃসময়ের সাবেক সভাপতি ও শৈরাচার এরশাদ, খালেদা বিরোধী আন্দোলনের রাজপথের লড়াকু সৈনিক সাবেক শেরপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন ছানু ।
এদিকে ৯০/৯৬ সালের রাজপথ কাপানোঁ সময়ের সাহসী সন্তান, ত্যাগী নেতাকর্মীদের সহায়তা প্রদানকারী সাবেক সফল পৌরপতি ও দুই বারের শেরপুর জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান । যদিও দুই বারই জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েও ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হুমায়ুন কবির রুমান তিনিও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়েছেন ।
অপরদিকে জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচনায় রয়েছেন আ’লীগের দুঃসময়ের কান্ডারী, ত্যাগী, নির্যাতিত, রাজপথের আন্দোলনের নেতৃত্বের অগ্রভাগের সাহসী সাবেক ছাত্রনেতা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল ।
সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে থেকে কে কে আসছেন শীর্ষ নেতৃত্বে এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্রই ব্যাপকভাবে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। শীর্ষ দ্ইুটি পদের প্রতি সকলের এখন তীক্ষ দৃষ্টি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ বীরমুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক সাথে কথা হলে তিনি বলেন জেলার সংসদীয় ৩টি আসনেই আমাদের। বিশ্বমানবতার নেত্রী উন্নয়নের রোল মডেল জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সব সময় ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। সম্মেলনকে সফল করার লক্ষে আমাদের তৃনমূলে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। সকল স্থরের নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করবে।
প্রতিনিধি/জেএ