জামাল হোসেন খোকন, জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা): চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশার সঙ্গে তীব্র শীতের দাপট শুরু হয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় সমান থাকায় শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (সকাল ৯টা) জীবননগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে এই শীত অনুভূত হচ্ছে এবং তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
গত শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঠান্ডার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষজন সড়কের পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে প্রায় ১৫০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেককে বারান্দা ও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. সুজন জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশুরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। শিশুদের গরম কাপড় পরানো ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকলে শীতজনিত দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।