মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর গোপন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক স্কুলছাত্রী অনলাইনে ভিডিও কলে শিক্ষককে চুমু দিতে বলেন এবং শিক্ষকও সেই অনুরোধে সাড়া দেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ছাত্রী ও শিক্ষক উভয়েই গণমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। ছাত্রী অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন সম্পর্ক থাকার পর শিক্ষক তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষোভ থেকেই ভিডিওটি ভাইরাল করেছেন তিনি। তার ভাষ্য, আমি ভিডিওটা নিজের ইচ্ছায় করেছি, ভাইরালও করেছি। সে বয়স্ক, তার পরিবার আছে—এ অবস্থায় আমাকে কেন প্রতারণা করল? বিয়ে না করায় আমি রাগে এটা করেছি।
অন্যদিকে শিক্ষক দাবি করেন, ছাত্রী তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে নানা সময় ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রী হঠাৎ ফোন দিয়ে জানায় তার পেটে তিন মাসের সন্তান রয়েছে এবং তাকে বিয়ে করতে হবে। শিক্ষক রাজি না হলে ছাত্রী নাকি ৪০ লাখ টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তার পেটে সন্তান থাকার প্রশ্নই আসে না। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষক আরও দাবি করেন, ছাত্রী অতীতে হাত কেটে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। এসব কারণে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন বলে জানান।
ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রীকে নিয়ে হতবাক তার বাবা বলেন, তিনি এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানতেন না। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ৪০ লাখ টাকা আদায় করতে না পেরে ছাত্রীই ভিডিও ছড়িয়েছেন।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন জানায়, এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হবে।
এরই মধ্যে সুযোগে স্থানীয় কিছু দালাল চক্র শিক্ষক ও ছাত্রী উভয়কে ফোনে হুমকি দিয়ে অর্থ দাবি করছে বলেও জানা গেছে। শিক্ষক জানান, বিভিন্ন নম্বর থেকে তাকে প্রতিনিয়ত হুমকি ও চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
ঘটনার জেরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের দাবি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা হোক।