শিরোনাম
◈ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা ‘মানুষের ঈদের দিন’: আপিল বিভাগের রায়ে জয়নুল আবেদীনের প্রতিক্রিয়া ◈ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল নিয়ে যা বললেন আমীর খসরু ◈ পা‌কিস্তান ক্রিকেট বোর্ড থে‌কে স‌রে দাঁড়া‌লে আজহার আলি ◈ ‘শিবির’ মন্তব্য ভাইরাল: ধানমন্ডি ৩২-এর ঘটনার ব্যাখ্যায় সমালোচনার মুখে এডিসি মাসুদ আলম ◈ ‘অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ক্ষতি সবার’, ককটেল হামলার পর কঠোর বার্তা ডিএমপি কমিশনারের ◈ কুমিল্লায় টাউন হল মাঠে বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশ ডাকায় উত্তেজনা, প্রশাসনের নির্দেশ—না সরালে ১৪৪ ধারা ◈ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বে সৎ ও নিরপেক্ষ ওসি খুঁজছে পুলিশ সদর দপ্তর ◈ ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহকারী পোল্যান্ডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিস্ফোরক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ্যে ◈ যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার শুরু ◈ নির্বাচ‌নের পর নতুন সরকা‌রে শেখ হাসিনা ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলবে?

প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৮ দুপুর
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মানিকগঞ্জের বায়রা ইউনিয়ন: এক ইউনিয়ন থেকেই বছরে ৩০ কোটি টাকার আখ বিক্রি

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়ন। এই এক ইউনিয়ন থেকেই বছরে আখ বিক্রি হয় প্রায় ৩০ কোটি টাকার। সুমিষ্ট আখ ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দিন দিন চাষ বাড়ছে সেখানে।

সিংগাইর উপজেলায় এ বছর ২৮০ হেক্টর জমিতে চার জাতের আখের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বায়রা ইউনিয়নে আবাদ হয়েছে ২৭০ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলায় আখ চাষের সঙ্গে জড়িত এক হাজার ২০০ কৃষক। উপজেলা কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বায়রা ইউনিয়ন থেকে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার আখ বিক্রি হয়। 

বায়রা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী সহিদুল ফেরদৌস বলেন, সিংগাইর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আখ উৎপাদন হয় বায়রা ইউনিয়নে। এ অঞ্চলের মাটি আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তাই প্রতিবছর কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর হাজারের বেশি কৃষক আখ চাষে যুক্ত হয়েছেন। ফলন ও বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা আগের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন।

সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, কৃষকরা বিঘায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় এক লাখ টাকার আখ বিক্রি করছেন। সাথি ফসলে বাড়তি আয় হচ্ছে। তিনি বলেন, বায়রা ইউনিয়ন থেকেই এ বছর অন্তত ৩০ কোটি টাকার আখ বিক্রি হবে।

বায়রা ইউনিয়নের নয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আলকাস হোসেন। জীবিকার তাগিদে একসময় পাড়ি জমান সৌদি আরবে। দীর্ঘ ১২ বছর সেখানে কাজ করে দেশে ফিরে শুরু করেন আখ চাষ। কৃষি বিভাগের পরামর্শে চার বছর ধরে আখের সঙ্গে ভুট্টা, সরিষাও চাষ করছেন তিনি। চলতি বছর তিন বিঘা জমিতে এক লাখ টাকা খরচ করে আখ চাষ করেছেন। বিক্রি করেছেন প্রায় ৩ লাখ টাকা। পাশাপাশি ভুট্টা ও সরিষা বিক্রি করে আরও ৭০ হাজার টাকা পেয়েছেন। চারাভাঙ্গ গ্রামের কৃষক দ্বীন মোহাম্মদ জানান, চলতি বছর ছয় বিঘা জমির মধ্যে বোম্বাই, রঙবিলাস জাতের আখ চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে বিক্রি করেছেন চার লাখ টাকার। আরও দুই লাখ টাকার আখ ক্ষেতে আছে। বায়রার কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, এই এলাকা আখ চাষের জন্য বিখ্যাত। চার-পাঁচ পুরুষ ধরে এখানে আখ চাষ চলে আসছে। আগে শুধু স্থানীয় বাজারে বিক্রি হতো, এখন ঢাকা থেকে পাইকার এসে আখ কিনে নিয়ে যান। এ ছাড়া বায়রা হাটে প্রতিদিন কয়েক টন আখ বিক্রি হয়।

কৃষক সোহরাব মিয়া বলেন, প্রতিটি আখ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা পুরো ক্ষেত পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। তারা ক্ষেত থেকে কেটে, পরিষ্কার করে, আঁটি বেঁধে ট্রাকে তোলেন।  

নয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক রহমত মিয়া বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম দিকে আখের চারা রোপণ করা হয়। সঙ্গে সরিষা দিই, পরে আলু বা ধনিয়া বুনি। এতে এক জমি থেকেই দুবার ফসল পাওয়া যায়। আখ বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত সাথি ফসলেই খরচ উঠে যায়। এই পদ্ধতিতে একই জমি থেকে দুটো ফসল তুলছেন। এতে আয় বাড়ছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। 

বায়রা বাজারের পাইকার শাহীন মোল্লা বলেন, বায়রা এখন আখের বড় হাটে পরিণত হয়েছে। ঢাকার কাঁচাবাজার, সাভার আর কেরানীগঞ্জে এখানকার আখের খুব চাহিদা। বায়রা থেকে ঢাকায় যেতে দেড় ঘণ্টার কম সময় লাগে। রাস্তাঘাট ভালো থাকায় ট্রাক সহজে যাওয়া-আসা করতে পারে। তাই আমরা এখানকার কৃষকদের ক্ষেত আগেভাগেই কিনে রাখি। ক্ষেত থেকে আখ কেটে বাজার আনার সঙ্গে সাথে ঢাকা ও সাভার অঞ্চলের পাইকাররা এসে নিয়ে যান।

ঢাকার কারওয়ান বাজারের পাইকার লিটন হোসেন নিয়মিত বায়রা বাজার থেকে আখ কেনেন। তিনি বলেন, বায়রার আখের মিষ্টতা আর আকারের কোনো তুলনা নেই। প্রায় চার বছর ধরে এখানকার কৃষকদের কাছ থেকে আখ কিনছি। প্রতিদিন তিন থেকে চার ট্রাক আখ ঢাকায় নিয়ে যাই। 

সূত্র: সমকাল 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়