নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় আব্দুর রশিদ নামে এক জমি ব্যবসায়ীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর জোর করে দাফন সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে রুবেল হাওলাদার বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে নিহত আব্দুর রশিদের দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৪২), তার দুই মেয়ে জাকিয়া সুলতানা (২১), মায়া আক্তার (৩৫) ও পরকীয়া প্রেমিক জাকারীয়া ভেন্ডার (৫৫) সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সন্ত্রাসীকে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে মামলার আদেশ পেয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিন উদ্দিন কাদেরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে রুবেল হাওলাদার।
তার আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির আরও জানান, গত ২৮ আগস্ট রাতে ফতুল্লার ভুইগড় মাহমুদপুর এলাকায় জমি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। আব্দুর রশিদের তিন তলা এ বাড়িটি দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ও মেয়ে জাকারিয়া সুলতানার নামে আগেই লিখে নিয়েছেন তারা। এরপর থেকে মোর্শেদা পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জাকারিয়া ভেন্ডার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে।
বাদীপক্ষের এই আইনজীবি আরও জানান, মোর্শেদার আগের স্বামীর মেয়ে মায়া আক্তার প্রায় সময় আব্দুর রশিদকে বাড়ির জমিটি লিখে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন। আর স্ত্রী মোর্শেদাকে নিজ ঘরেই পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অন্তরঙ্গ সময় কাটাতে দেখতেন আব্দুর রশিদ। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে মোর্শেদা বেগম দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে আব্দুর রশিদকে মারধর করতেন।
আইনজীবী সাব্বির জানান, হত্যাকাণ্ডের রাতে খুন হওয়ার আশঙ্কার কথা আব্দুর রশিদ নিজেই আশপাশের লোকজনদের জানিয়ে যান। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা এসে আব্দুর রশিদের রক্তাক্ত লাশ দেখে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি বুঝতে পারেন। তখন তারা থানায় খবর দিতে চাইলে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে মাহমুদপুর কবরস্থানে আব্দুর রশিদের লাশ দাফন করা হয়।
বাদী রুবেল হাওলাদার এ বিষয়গুলো মামলায় উল্লেখ করেছেন বলে জানান তার আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোর্শেদা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, 'জাকারিয়া ভেন্ডারের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আমার স্বামীর সঙ্গে ব্যবসা করতেন। তারা মামলায় যা উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।' উৎস: সময়নিউজটিভি।