শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু ডাক্তার ও কর্মচারীর যোগসাজশে চলছে রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নীতিমালা উপেক্ষা করে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীরের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অভিযোগ রয়েছে একজন কর্মচারীর শেয়ার থাকায় এটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
হাসপাতালে ডিজিটাল আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকলেও নানা অজুহাতে রোগীদের পাঠানো হয় ওই সেন্টারে। এমনকি ডিউটির সময়ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা সেখানে রোগী দেখেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতাল থেকে এক কিলোমিটার (বিশেষ ক্ষেত্রে আধা কিলোমিটার) এলাকার মধ্যে কোনো বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করা যায় না। অথচ নিয়ম অমান্য করে হাসপাতালের পূর্ব পাশে সীমানা প্রাচীর ঘেঁষেই চলছে রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দুপুর পৌনে দুইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মো. শামীম মিয়া সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করছেন। কিছুক্ষণ পরেই তিনি হাসপাতালের ডিউটিতে ফিরে যান। হাসপাতালে গিয়ে তার কক্ষে পাওয়া গেলে কর্তব্যরতরা জানান, তিনি ডিউটিতে আছেন।
ডিউটির সময়ে বেসরকারি সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডা. শামীম বলেন, হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার মতো কেউ নেই। স্থানীয় মানুষকে সেবা দিতে আমি এখানে কাজ করি। রোগী আসলে আমাকে ফোন দেয়, আমি তখন চলে আসি।
রোগী নাসরিন জানান, হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর আল্ট্রাসনোগ্রাফির জন্য তাকে ওই সেন্টারে যেতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে জানানো হয়েছিল, আল্ট্রার ডাক্তার আসেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেন্টারের এক কর্মচারী জানান, শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী সাইদুর রহমানও আছেন। তবে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সাইদুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করেন।
রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডিএমডি আবুল কালাম আজাদ টিটু বলেন, আমাদের মোট ২২ জন শেয়ারহোল্ডার আছেন। সাইদুর রহমানের কোনো শেয়ার নেই। আমার প্রতিষ্ঠানের বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। কিভাবে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে সেটা কর্তৃপক্ষ জানবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. কাজী একেএম রাসেল বলেন, আগে এক কিলোমিটার দূরে সেন্টার করার নিয়ম ছিল, এখন নেই। তবে ডিউটির সময় সরকারি ডাক্তারদের বাইরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা অনুচিত। এ বিষয়ে ডা. শামীমকে সতর্ক করা হবে। আর সরকারি কর্মচারীরা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার হতে পারেন না।