জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার গাজা গণহত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া বাধ্যতামূলক নির্দেশনা তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে এবং এই যুদ্ধ তৃতীয় ভয়াবহ বছরে প্রবেশ করছে।
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনের উচ্চপর্যায়ের বিতর্কের উদ্বোধনী ভাষণে গুতেরেস বলেন, “আন্তর্জাতিক বিচার আদালত যে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে এবং অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
আইসিজে-এর আদেশে কী বলা হয়েছিল?
আইসিজে (জাতিসংঘের শীর্ষ আইনগত সংস্থা) ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছু প্রাথমিক নির্দেশনা জারি করে। এর আওতায় ইসরায়েলকে বলা হয়েছিল, গণহত্যা এবং গণহত্যার উসকানি বন্ধ করতে হবে। সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বাধাহীন প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘ অনুমোদিত তদন্তের পথ সুগম করতে হবে।
আদালত স্পষ্ট করে দেয়, এই নির্দেশনা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের জন্য বাধ্যতামূলক।
গাজায় মৃত্যুর মাত্রা নজিরবিহীন
গুতেরেস বলেন, আদালতের আদেশের পর থেকে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সহিংসতা আরও বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, “আমি যখন থেকে জাতিসংঘের মহাসচিব হয়েছি, তখন থেকে কোনো সংঘাতে এমন মৃত্যু ও ধ্বংস দেখিনি।”
তিনি আবারও ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাসের ইসরায়েল আক্রমণকে কঠোরভাবে নিন্দা করেন এবং বলেন, “এই হামলার কোনো ন্যায্যতা নেই, যেমনটা গাজা ও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চালানো সম্মিলিত শাস্তিরও কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি
গুতেরেস বলেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি জরুরি। সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। গাজায় পূর্ণ মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “একটি টেকসই সমাধান একমাত্র সম্ভব, যদি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ইসরায়েলের পাশে টিকে থাকতে পারে। উপনিবেশ সম্প্রসারণ, সহিংসতা ও দখলের হুমকি বন্ধ করতে হবে।”
গুতেরেসের এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক ব্যর্থতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে।