রতন কুমার রায়,ডোমার(নীলফামারী)প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমারে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ডান হাতে মামা শ্বশুরের কামড়ে গুরুতর আহত হয়েছে এক গৃহবধূ। আহত অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৮সেপ্টেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত ঘটনায় গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে গৃহবধূর মামা শশুড় হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের নুরল হকের ছেলে মো. নুর হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ডোমার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা গেছে, ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমানের ছেলে শরীফুল ইসলাম(২৮) ও পূর্ব হরিনচড়া গ্রামের ওসমান গনির মেয়ে মোছা. জান্নাতুন(২২)এর বিয়ে পারিবারিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। কিন্তু দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হলেও বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শাশুড়ি কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ করে গৃহবধূ জান্নাতুন।জান্নাতুন বলেন, আমার শশুড় মারা যাওয়ার পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার শাশুড়ি আমাকে ছাড় দেন না। কয়েকদিন যাবত আমার শাশুড়ি আমায় নিয়ে এলাকার অনেকে কাছে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয় নিয়ে আমার শাশুড়ির সাথে ঝগড়া লাগলে এক পর্যায়ে আমার শাশুড়ি আমার মামা শশুরসহ তার আত্মিয়দের মোবাইলে কল দিয়ে বাড়ীতে ডাকেন। আমার স্বামী কাজের সুবাধে বাইরে থাকার কারনে আমার মামা শশুড়সহ কয়েকজন আত্মীয় এসে আমাকে আক্রমন করে বাড়িঘর ভাংচুর চালায় এবং আমার ডান হাতে কামড় দিয়ে গুরুতর আহত করে। আমি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার ভাই আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জান্নাতুনের স্বামী শরীফুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীকে এর আগেও আমার মামা কয়েকবার মারধর করেছিলো। লজ্জার কারনে কাউকে কিছু বলিনি। মায়ের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সত্য বলে জানান শরীফুল। এমন সমস্যা নিয়ে এর আগেও কয়েকবার গ্রাম্য শালিস মিমাংসা হয়েছে কিন্তু তেমন কোনো কাজ হয়নি।
জান্নাতুনের ভাই সুজন ইসলাম বলেন, বোনের ফোন পেয়ে দ্রুত ছুটে যাই। গিয়ে দেখি সে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার উপস্থিতি দেখে অভিযুক্তরা আমাকে হুমকি দেন। পরে আমি উপস্থিত লোকদের সহযোগীতায় আমার বোনকে হাসপাতালে নেই এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করি। সাংসারিক সমস্যা থাকায় আমার বোন দুলাভাই দীর্ঘদিন নিজ বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাসায় ছিলেন তারপরেও সমস্যা শেষ হয়না।
আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে জান্নাতুনের শাশুড়ি মোছা. ফুলবানু(৪৫)। বউয়ের হাতে কামড়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার বউ আমার উপর হাত তুলেছে সেজন্য আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। তবে কোনো পুরুষ তাকে মারেনি। এবিষয়ে জান্নাতুনের মামা শশুড় নুর হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
হরিনচড়া ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল রানা জানান, বউ শাশুড়ি মারামারি করে দুই পক্ষ চিকিৎসাধিন রয়েছে। তারা সুস্থ্য হলে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। ওই পরিবারের সমস্যা নিয়ে ইতিপূর্বেও সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে স্থায়ী সমাধান হয়নি বলে তিনি জানান। অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার এসআই মো. কাওছার আলী।