শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লা জেলার চান্দিনা, দেবিদ্বার, বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১। চার উপজেলায় শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক মিলিয়ে প্রায় ৬ লাখ ২৪ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি সারা দেশে পল্লী বিদ্যুতের সংস্কার, বৈষম্য দূরীকরণ, হয়রানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধ এবং বরখাস্তদের পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর অধীনে কর্মরত মিটার রিডার ও লাইনম্যানরা।
এর অংশ হিসেবে গত রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর প্রধান কার্যালয়, ৪টি এরিয়া অফিস ও ৫টি উপ-এরিয়া অফিসে কর্মরত ৬৮৮ জন মিটার রিডার ও লাইনম্যানের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর বিপুলসংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত ২০২৪ সালের জুলাই থেকে তারা কর্মবিরতি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এদিকে, অনুপস্থিত কর্মীরা কবে নাগাদ কাজে ফিরবেন তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
চান্দিনা উপজেলার জামিরাপাড়া গ্রামের গ্রাহক এরশাদুল হক বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যুতের লাইন বিকল রয়েছে। বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। অভিযোগ করেও কোনো সমাধান মেলেনি।”
কর্মস্থলে অনুপস্থিত মিটার রিডার দুলাল হোসেন জানান, “আমরা ছুটিতে আছি। দাবিগুলো পূরণ না হলে কাজে ফিরব না।”
লাইনম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি, কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না।”
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম (ইএন্ডসি) মহর উজ্জামান খান বলেন, “মিটার রিডার ও লাইনম্যানরা ছুটি নিয়ে রবিবার থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে এখনো বড় কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি।”
অন্যদিকে এজিএম (এমএস) তওসিফ জামিল চৌধুরী জানান, “সাড়ে তিন শতাধিক কর্মীর অনুপস্থিতির কারণে গ্রাহকদের নতুন সংযোগ প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে লাইনের ত্রুটি মেরামত, ট্রান্সফর্মার ঠিক করা এবং মিটার রিডিং নেওয়াসহ নানা কাজ যথাসময়ে করা কঠিন হয়ে পড়ছে। দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মোহাম্মদ আবু রায়হানের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।