ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে ধর্ষণের শিকার ১২ বছরের এক শিশু অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় বিষয়টি ধরা পড়লে তাড়াইল স্পেশালাইজড হাসপাতালের স্টাফ ও স্থানীয় জনতা পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেয়। আটক হোসেন মিয়া (৪৫) তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কলুমা গ্রামের মৃত লাল মাহমুদের ছেলে।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ধর্ষিতা শিশু মেয়েটির বাবা নুরু মিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ধারায় তাড়াইল থানায় মামলা করেন। মামলা নং ৯ (১)। এফআইআর নং-২, পরে ধর্ষক হোসেন মিয়াকে দুপুর ১টায় কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।
তাড়াইল স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেসরকারি বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র তাড়াইল স্পেশালাইজড হাসপাতালে অভিভাবকের সাথে ধর্ষণের শিকার ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েটি চিকিৎসা নিতে গেলে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ আলট্রাসনোগ্রামের পরামর্শ দেন।
পরীক্ষার রিপোর্টে ওই শিশুটি ২৫ সপ্তাহের গর্ভবতী। এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি অভিভাবককে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ওই শিশুটির স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, তার প্রতিবেশী হোসেন মিয়া নামের এক ব্যক্তি এ ঘটনায় জড়িত। পরে হাসপাতালের ম্যানেজার ওয়াসিম আকন্দ সোহাগ অভিভাবকের উপস্থিতিতে অভিযুক্তকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে অভিযুক্তকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
তাড়াইল থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, নাবালিকা মেয়েটি কলুমা ইকরা বাবুল উলুম মাদরাসায় ৬ষ্ট শ্রেনীতে লেখা পড়া করেন। ধর্ষক হোসেন মিয়ার বাড়ীর পাশের রাস্তা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতো। চলতি বছরের মার্চ মাসের ২ তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ীতে আসার সময় বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিটে লাল মিয়া মাস্টারের পরিত্যাক্ত পুকুরের কাছে আসা মাত্রই শিশুটির পথ আটকিয়ে দেয় ধর্ষক হোসেন মিয়া। শিশুটির মুখ চেপে ধরে লাল মিয়া মাস্টারের পরিত্যক্ত পুকুরের পাশে বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে ধর্ষন করে এবং হুমকি দেয় ধর্ষনের বিষয়ে মুখ খুললে তার বাবা ও মা'কে খুন করে ফেলবে। পরবর্তীতে ধর্ষক হোসেন মিয়া বিভিন্ন সময় মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করতো।
উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কলুমা গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, হোসেন মিয়া লোকটা খুবই খারাপ। এলাকার ছোট বাচ্চারা তাকে অনেক ভয় পায়। উপজেলার ধলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফরোজ আলম ঝিনুক বলেন, তাড়াইল স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও স্থানীয় জনতা ধর্ষক হোসেন মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাতে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তাড়াইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বির রহমান বলেন, হোসেন মিয়ার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষীতা শিশুটির বাবা নুরু মিয়া মামলা দায়ের করেছেন। রোববার দুপুর ১টায় হোসেন মিয়াকে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।