জিয়া উদ্দিন সিদ্দিকী, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অর্ধশতাধিক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মাঝে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব ওষুধ সেবন করে অন্তত একজন নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি উঠেছে ভুক্তভোগী ও স্বজনদের পক্ষ থেকে।
ভুক্তভোগী বৃষ্টি আক্তার নামে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর স্বামী রনি খান অভিযোগ করেন, গত ১৬ জুলাই আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার স্ত্রীকে ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেট দেওয়া হয়। ওষুধ সেবনের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ওষুধের প্যাকেটে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হন তারা।
জানা গেছে, রনি খান তার স্ত্রী বৃষ্টিকে নিয়ে প্রথম ২৭ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে যান। সে সময় সেবিকা ইসরাত জাহান সেতু তাকে এএনসি ও পিএনসি কার্ড ইস্যু করেন। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ১৬ জুলাই আবার গেলে তাকে ও আরও অন্তত ৫০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মে মাসে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়।
ঘটনার পর অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাদের স্বজনরা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার পর সেবিকা ইসরাত জাহান সেতু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দ্রুত সরে যান বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সেবিকা ইসরাত জাহান বলেন, "আমার কোনো দায় নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ওষুধ দিয়েছে, আমি সেটাই বিতরণ করেছি।" কতজন নারীকে বিতরণ করেছেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি নিরুত্তর থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান জানান, বিতরণ করা ওষুধগুলোর মেয়াদ গত মে মাসেই শেষ হয়ে গেছে। এটি স্পষ্টতই অনুচিত ছিল। বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, "বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কীভাবে বিতরণ হলো তাও খতিয়ে দেখা হবে।"