মিজান লিটন: চাঁদপুরে জুমার নামাজ শেষে মসজিদে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইমামকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক ব্যক্তি। হামলার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
আহত খতিব হলেন মাওলানা আ.ন.ম. নূরুর রহমান মাদানী, সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মোবাল্লিগ এবং দক্ষিণ গুনরাজদী এলাকার বাসিন্দা। তিনি মাঝেমধ্যে ঐ মসজিদে খুতবা ও ইমামতি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নামাজ শেষে মুসল্লিরা মসজিদ ছাড়লেও খতিব সাহেব তখনো ভেতরে অবস্থান করছিলেন। এমন সময় একজন ব্যক্তি মসজিদে ঢুকে কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে হঠাৎ তার কানের গোড়ালিতে কোপ মারেন। এতে খতিব গুরুতর আহত হন।
আটক হওয়া ব্যক্তি মো. বিল্লাল হোসেন (৫০), পিতা আইয়ুব আলী। তার স্থায়ী ঠিকানা চাঁদপুর সদর উপজেলার মনোহরখাদি, বিষ্ণুপুর। সে বর্তমানে শহরের ৭নং ওয়ার্ড বকুলতলা রোডের অস্থায়ী বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক সপ্তাহ আগে এক খুতবায় খতিব সাহেব নবী করিম (সা.)-কে "ইসলামের বার্তাবাহক" হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এই বক্তব্যে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষুব্ধ হন বিল্লাল হোসেন তারই জের ধরে শুক্রবার জুমার নামাজ কে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালান। মনে হয় এটি তার পূর্বে থেকেই পরিকল্পনায় ছিল। তার চাপাতিতে লেখা ছিল "আমার নবীজিকে অপমান করার কারণে তাকে হত্যা করা হলো।"
পরে এলাকার মুসল্লিহন আহত মাওলানা নূরুর রহমান মাদানীকে দ্রুত চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্কি করান।বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সৈয়দ আহমদ কাজল জানান, "রোগীর কানের গোড়ালিতে চাপাতির আঘাতে ১০-১২টি সেলাই লেগেছে। বর্তমানে তিনি ওসেক ইউনিটে চিকিৎসাধীন।"
এ ঘটনায় এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে। সামাজিক, ধর্মীয় ও নাগরিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এটি ধর্মের নামে চরম উগ্র আচরণ।
স্থানীয়রা বলেন, "খতিব সাহেবের বক্তব্যে কোনো ধরনের অবমাননা ছিল না। একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ ধর্মীয় ভিন্নমত পোষণ করলেও তা হত্যার উদ্দেশ্যে এমন নেক্কারজনক হামলা নয়।"
চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বাহার মিয়া বলেন,"ঘটনার পরপরই আমরা অভিযুক্তকে আটক করেছি। এ ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে।