ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির প্রায় ২২ ঘন্টা পর নিখোঁজ দুই শিশু আবির (৬) ও জুবায়েদ (৬) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনেরা। আবির পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের বাসিন্দা হাবিব মিয়ার ছেলে ও জুবায়েদ একই গ্রামের মোমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তারা দুজনই পাগলা থানা এলাকার বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিলো।
চরফরাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুধবার ভোরে স্বজনেরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির ও জুবায়েদকে খুঁজতে বের হয়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে দুই শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আবির ও জুবায়েদসহ ৯ জন শিক্ষার্থী ছোট নৌকায় করে ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিয়ে মাদরাসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ব্রহ্মপুত্রের স্রোতের তোড়ে ছোট নৌকাটি দত্তের বাজার এলাকার কাছাকাছি যেতেই ডুবে যায়। নৌকাডুবির পর শাপলা আক্তার (১৪)সহ সাত শিক্ষার্থী সাঁতরে তীরে ওঠতে সক্ষম হয় এবং দুই শিশু আবির ও জুবায়েদ পানিতে হাবুডুবু খেতে থাকে। এ সময় আবির আর্তচিৎকার করে শাপলাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘ফুফু, আমাকে বাঁচাও’। এ পরিস্থিতিতে শাপলা ভাইপো আবিরকে উদ্ধারের জন্য নদে নেমে সে নদের পানিতে তলিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ ও কিশোরগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরিদল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। উদ্ধার তৎপরতার এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলের খানিকটা দূর থেকে শাপলা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার তৎপরতা চালালেও দুই শিশু আবির ও জুবায়েদ এর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে ওই দুই শিশুর মরদেহ ব্রহ্মপুত্রে ভেসে ওঠে।