আইরিন হক, বেনাপোল প্রতিনিধি: প্রায় এক বছর ধরে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কেমিকেল ল্যাবের গুরুত্বপূর্ণ হ্যাজমেট মেশিন। এর ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্যের খালাস প্রক্রিয়া। কেমিকেল জাতীয় পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করতে বাধ্য হয়ে এখন এসব নমুনা পাঠাতে হচ্ছে খুলনা ও ঢাকার ল্যাবে, যার ফলে সময়, অর্থ এবং ভোগান্তি—তিন দিক থেকেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে মেশিন মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা হ্যাজমেট মেশিনটি সচল করতে পারছেন না। অথচ মেশিনটি মেরামতে প্রয়োজন মাত্র ১৫ থেকে ১৭ লাখ টাকা।
বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার বড় একটি অংশই কেমিকেলজাত। এসব পণ্য শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয় এবং কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর কেবল কেমিকেলজাত পণ্য থেকেই রাজস্ব আয়ের ৩০ শতাংশ আসে। নিয়ম অনুযায়ী এসব পণ্য খালাসের আগে কেমিকেল মান পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু হ্যাজমেট মেশিন অচল থাকায় এই পরীক্ষা করতে দেরি হচ্ছে, যার ফলে পণ্যচালান আটকে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কখনো কখনো রিপোর্ট পেতে এক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে।
পণ্য আটকে যাওয়ায় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং ব্যবসায়ীদের প্রতি চালানে গুনতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহাসিন মিলন বলেন, “প্রতিবছর বেনাপোল কাস্টমস থেকে সরকার প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পায়। অথচ মাত্র ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ না থাকায় ল্যাবের মেশিন ঠিক না হওয়া খুবই দুঃখজনক।”
বেনাপোল বন্দর আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, “আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে ৪০ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল পণ্য। দ্রুত হ্যাজমেট মেশিনটি সচল না করলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।”
বেনাপোল কাস্টমস হাউস কেমিকেল ল্যাবের টেকনিশিয়ান তাপস বলেন, “ল্যাবের যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে তা মেরামতের জন্য কোনো নির্ধারিত বরাদ্দ নেই এনবিআরের। তবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে এবং সমাধানের চেষ্টা চলছে।”