রুকুনুজ্জামান, পার্বতীপুর প্রতিনিধি: সারা দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের প্রভাবে পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন বিনোদন স্পটগুলোতে ঈদের পরবর্তী সময়েও দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা প্রচণ্ড গরমে ঘরেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষ লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পার্বতীপুরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হাবড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের উত্তর মরলাই গ্রামে অবস্থিত “দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা পার্ক”-এ দর্শনার্থীর সংখ্যা অন্যান্য ঈদের ছুটির তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে কম। পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার রইচ উদ্দীন বাবলু জানান, গরমের কারণে দর্শনার্থীরা কম আসায় পার্ক পরিচালনা ব্যয় মেটানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথমে 'আবু বিনোদন তাহের মিয়া এগ্রো ফার্ম' নামে শুরু করা এ প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে একটি মিনি চিড়িয়াখানায় রূপ নেয়। বর্তমানে পার্কটিতে রয়েছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বা, চিত্রা হরিণ, কচ্ছপ, ইমু পাখি, ময়ূর, তিন পা ওয়ালা শাহীওয়াল গরু, জার্মান স্পিস কুকুর, বানর, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, চীনা হাঁস, ককটেল পাখি, ব্রাহমা মোরগ, বিলেতি ইঁদুরসহ নানা প্রাণী ও পাখি। শিশুদের বিনোদনে রয়েছে নৌকা, চরকি, দোলনা এবং বিভিন্ন খেলার সামগ্রী।
গেটম্যান মোজাফফর জানান, ২৭ জন কর্মচারীর মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৭ জন কাজ করছেন। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় কর্মচারীদের বেতন দেওয়া নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন মালিকপক্ষ।
চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা যেমন ফুলবাড়ীর এলুয়াবাড়ির তরিকুল ইসলাম, হিলির মাহাদি, জনি, জাহাঙ্গীর, আব্দুর রহমান ও দিনাজপুরের ছোট্ট সাদিয়া জানান, প্রাণীদের সংখ্যা আরও বাড়ালে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বাড়বে। কেউ কেউ বাঘ, ভাল্লুক, জিরাফ ও অজগরের মতো প্রাণী যুক্ত করার অনুরোধ জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মতিনাল জানান, এই মিনি চিড়িয়াখানাটি তার ওয়ার্ডে অবস্থিত এবং এটি এলাকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র। তিনি চান এটি গ্রামীণ পরিবেশে নিরিবিলি ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠুক।
তীব্র গরমের প্রকোপ কেটে গেলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আবারও বাড়বে বলে আশাবাদী পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা ছাড়া এ ধরনের উদ্যোগ দীর্ঘস্থায়ীভাবে টিকিয়ে রাখা কঠিন বলেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।