শিরোনাম
◈ ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের চাপ সামলাবে কে: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্যনীতিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা ◈ ডলারের বিশ্বায়ন: যেভাবে একটি মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতিকে শাসন করছে ◈ ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসছেন আরও ৩০ বাংলাদেশি ◈ যশোরের মনিরামপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে যুবদলের চার কর্মী গ্রেফতার ◈ মিয়ানমারের রাজনীতিতে নতুন মোড়, জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর! ◈ ইসরায়েলি নাগরিক সাফাদির সাথে সাক্ষাৎ: স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন নুর (ভিডিও) ◈ জিম্বাবুয়েকে হা‌রি‌য়ে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনা‌লে বাংলা‌দেশ ◈ মির্জা আব্বাসের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ (এনসিপি) সরকার? ◈ ফার্মেসির পরামর্শে শিশুর ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, গবেষণায় বিপদের ইঙ্গিত ◈ মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২৫, ০৫:২৫ বিকাল
আপডেট : ১১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নবীগঞ্জে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলছে অবৈধ পশুর হাট : কোটি টাকার বানিজ্য 

কিবরিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজারে প্রতি শনিবার নিয়মিতভাবে বসছে অবৈধ পশুর হাট। জেলা প্রশাসনের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই হাট বন্ধ হয়নি, বরং তা ঘিরে গড়ে উঠেছে কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য। ‘প্রত্যায়ন’ নামে বিক্রেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন ছাড়াই। অভিযোগ রয়েছে, এই অবৈধ কার্যক্রমের পেছনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের প্রভাবশালী একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান গত ৭ জানুয়ারি নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে লিখিত নির্দেশ দেন। এরপ্রেক্ষিতের ৩১ জানুয়ারি থেকে হাট পরিচালনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, কেউ যদি সরকারি অনুমতি ছাড়া হাট পরিচালনা করে বা সহযোগিতা করে, তবে তা হাট-বাজার আইন ২০২৩ ও মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হয়নি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রহস্যজনক নীরবতার সুযোগ নিয়ে জনতার বাজার পরিচালনা কমিটি গত চার মাসে অন্তত ১৫ বার অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়েছে। প্রতিবারই গরু-ছাগল বিক্রয়ের সময় ‘প্রত্যয়ন’ নামে প্রতি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। প্রতি হাটে আদায় হচ্ছে আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। স্থানীয় সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে।

প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধভাবে হাট বসিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। পশু বিক্রেতারা বলছেন, হাটে গরু বিক্রির সময় বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যায়ন বাবদ অর্থ আদায় করা হয়। এসব অর্থের কোনো বৈধতা নেই, এবং প্রদানকৃত রশিদগুলোর কোনো সরকারি ভিত্তি নেই। এতে করে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। হাতিয়ে নেয়া লাখ লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা নিয়ে ঢুকছে ব্যক্তির পকেটে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, হাটটি যেহেতু অনুমোদনহীন, তাই কোনো প্রত্যয়নপত্র বা রশিদের সুযোগ নেই। অবৈধভাবে পরিচালিত হাট থেকে অর্থ আদায় সম্পূর্ণ বেআইনি ও প্রতারণামূলক। প্রশাসনের এত স্পষ্ট নির্দেশনার পরও হাট বসায় এবং অর্থ আদায়ে কোনো ধরনের বাধা না আসায় তারা প্রশাসনের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নিরবতা অবৈধ বাণিজ্যকে আরও উৎসাহিত করছে। প্রশাসনের নিক্রিয়তা এবং বার বার নির্দেশনা অমান্য করেও বাজার কমিটির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবকে প্রমাণ করে।
সব মিলিয়ে জনতার বাজার পশুর হাট এখন প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও কোটি টাকার অবৈধ অর্থ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে খাস কালেকশন করা হচ্ছে না। এরপরও কেউ যদি রশিদের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে থাকে, তা আইনগতভাবে দন্ডনীয় অপরাধ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়