চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক ছাত্রীরা রাত ১০টার মধ্যে হলে না ফিরলে সিট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মাইকে এমন প্রচার চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখানে প্রক্টরিয়াল বডির একটি টহল গাড়ি এসে থামে। গাড়ি থেকে মাইকে উচ্চ শব্দে ঘোষণা করা হয়, সব মেয়েরা ১০টার মধ্যে হলে ফিরে যাও। ১০টা ১ মিনিটে যদি কেউ বাইরে থাকে, তাহলে তার সিট বাতিল করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছাত্রীদের নাম-রোল লিখে নেয়ার মতো ভঙ্গিতে এগিয়ে আসতে দেখা যায় এক সহকারী প্রক্টরকে।
এই ঘটনায় চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ছাত্রীদের মধ্যে। ছাত্রীদের একাংশ বলছেন, সহকারী প্রক্টরের এই আচরণ শুধু ‘হুমকি’ নয়, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের বিরূপ আচরণের ‘বহিঃপ্রকাশ’।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অনেকেই। প্রশ্ন তুলেছেন ছেলেরা বাইরে থাকতে পারলে মেয়েদের জন্য কঠোর নিয়ম কেনো? মেয়েরা রাত ১০টার পর রাস্তায় থাকলেই কি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কেবল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে?
এ ঘটনা সম্পর্কে সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসেন বলেন, আমি কড়া করে কিছু বলিনি। শুধু ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এ ধরনের কথা বলেছি। প্রচার চালানো হচ্ছে নিয়ম মানতে।
এর আগে, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আবাসিক হলগুলোর নোটিশ বোর্ডে টাঙানো এক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, রাত ৯টার পর হলে অবস্থানকারী ছাত্রীদের হল চত্বরের বাইরে থাকা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে তীব্র আলোচনা শুরু হয়।
২০২২ সালে ঘটে আরেকটি বহুল আলোচিত ঘটনা। একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রাত ১০টার কিছু পরে হলে ফিরছিলেন এক ছাত্রী। তাকে প্রায় আধা ঘণ্টা গেটের বাইরে আটকে রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে হলজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ছাত্রীরা। ঘটনার জেরে একজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিতে তখন বাধ্য হয় প্রশাসন। উৎস: দেশ রুপান্তর।