শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৭:১০ সকাল
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৫:৩৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেলভবনে তোলপাড়

দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে রেলওয়ের ডিজি করার তোড়জোর

আনিস তপন: বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্তমান মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার অবসরে যাচ্ছেন চলতি মাসের ১১ তারিখ। সেই হিসেবে শুরু হয়েছে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের তোড়জোড়। আপাতত একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক করার চেষ্টা চলছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। 

মহাপরিচালক পদে ঊর্ধ্বতন গ্রেডের (গ্রেড-২) যোগ্য, দক্ষ কর্মকর্তা থাকা সত্বেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে অভিযুক্ত নিম্ন গ্রেডের এক কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বর্তমানে রেলওয়েতে অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে উচ্চতর গ্রেডের (গ্রেড-২) তিন জন কর্মকর্তা রয়েছেন। এরপরও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নিম্নগ্রেডের (গ্রেড-৩) এক অতিরিক্ত মহাপরিচালককে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিতে চাইছে রেলের শীর্ষমহল। 

অভিযুক্ত কর্মকর্তার পক্ষে সাফাই গেয়ে গত নভেম্বরে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠান রেলপথ মন্ত্রী। তাতে মন্ত্রী জানান, রেলওয়েতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরী ভিত্তিতে সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে ওই কর্মকর্তাকে সুনির্দিষ্টভাবে জড়িত করা হয়নি।

তিনি জানান, এই মর্মে মতামত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তের জবাব বিবেচনায় ভবিষ্যতে অধিকতর দায়িত্বশীলতা, নিষ্ঠা, দক্ষতাসহ সরকারি বিধি-বিধান প্রতিপালন করে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে তাকে সতর্ক করে এ সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কোন বিভাগীয় মামলা করা হয়নি বলেও তাতে জানান মন্ত্রী।

এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ডিও লেটারে অতিরিক্ত মহাপরিচালককে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাল্যবন্ধুর জামাতা বলে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া এই কর্মকর্তার শ্বশুড় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক জতীয় নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জ থেকে এমএনএ নির্বাচিত হয়েছেন বলেও জানান রেলপথ মন্ত্রী। এসব পরিচয় থাকা সত্ত্বেও ওই কর্মকর্তাকে ২য় গ্রেড পদে অদৃশ্য কারণে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। 

রোববার রেলভবনে ঊর্ধ্বতন বেশ কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও তাকেই ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিতে চাইছে রেলওয়ের প্রভাবশালী মহল।

এমন অভিযোগ করে মন্ত্রণালয়েরও একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি নিজেই আদালতে মামলা করবেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ওই অতিরিক্ত মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্ত চলমান। দুইটি চিঠিতে (স্মারক নং- ০০.০১.০০০০.১০৩.০৬.০০১.২২.৪৮৪ তাং ০৬/০৬/২০২২) ও (স্বারক নং- ০০.০১.০০০০.৪০৩.০১.০৩৭.১৯ ২২৯৫৫ তাং- ২০/০৯/২০২১) জানা যায়, দুর্নীতি ও মানিলণ্ডারিং এর মত গুরুতর অভিযোগের তদন্ত চলছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় দলিল দস্তাবেজ ও রেকর্ডপত্র সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।


এ অবস্থায় ওই বিশেষ কর্মকর্তাকেই কেনো ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক করা হবে, এ নিয়ে গুঞ্জন ও অসন্তোষ চলছে রেলভবনে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়