সুজন কৈরী: [২] ঈদুল আজহায় যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
[৩] সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘প্রতি বছর ঈদে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধিতে নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
[৪] সভায় আসন্ন ঈদে দেশের সব পথে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরকে যেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা শতভাগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়িত্বশীল করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টজনেরা।
[৫] সরকার পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের তোষামোদি করছে বলে প্রতি ঈদে ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
[৬] তিনি বলেন, সরকার প্রতি বছর ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মুনাফার অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে ঈদের প্রস্তুতি সভা করেন।
[৭] অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়িত্ব দিলেও তারা সবাই মিলেমিশে ভাড়া নৈরাজ্য চালায়।
[৮] আলোচনা সভার ধারণাপত্রে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে, ফিটনেটবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধে গঠিত মনিটরিং কমিটিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি শুধুমাত্র পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা দায়িত্বে থাকেন। বাস্তবতা হলো ৯০ শতাংশের বেশি যাত্রীকে প্রতি ঈদে বাড়ি যেতে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়।
[৯] এমনকি বিআরটিএ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ না করে বরং স্বল্প দূরত্বেও রুট পারমিটের শেষ গন্তব্যের ভাড়া দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। যারা সড়কে চাঁদাবাজিতে জড়িত, ঈদযাত্রায় তাদের ওপর সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে চাঁদাবাজরাই চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত আটকে দেয়।
[১০] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, যোগাযোগমন্ত্রী নাগরিক সমাজের কথাই শুনতে চাচ্ছেন না। সিপিডি কী বলছে, টিআইবি কী বলছে, এসব তিনি শুনবেন না। নাগরিক সমাজে বা সুশীল সমাজের কথা না শুনলে তো কোথাও শৃঙ্খলা আনা সম্ভব নয়।
[১১] গাড়ির ফিটনেস থাকলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। দুর্ঘটনা হলো সব প্রস্তুতি থাকার পরও যদি কোনো সমস্যা হয়। কিন্তু সব জায়গায় সমস্যা থাকলে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। সড়কে হত্যার সব আয়োজন যেন করা আছে।
[১২] সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, যাত্রীকল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মহসিন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসকে/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :