ভবিষ্যতে কী হবে তা হয়তো আগে থেকে বলা যায় না। তবে আধুনিক বিজ্ঞান ভবিষ্যতের আভাস দিতে পারে বইকি। তেমনই আভাসের কথা শোনালেন নেদারল্যান্ডসের গবেষকরা। তাঁরা জানালেন আজ থেকে ২০ কোটি বছর পর ঠিক কতটা বদলে যাবে এই পৃথিবীর রূপ।
২০ কোটি বছর পর ভূগর্ভস্থ পাতগুলির রদবদল ঘটবে। নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সেসময় আফ্রিকার কিছু অংশ ভেঙে আলাদা হয়ে যাবে ওই মহাদেশ থেকে। তারপর তারা ভারত মহাসাগর ধরে এগিয়ে আসবে ভারতীয় উপমহাদেশের দিকে।
আফ্রিকার সোমালিয়া ভেঙে টুকরো হয়ে ভারতের দিকে চলে আসবে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। সেই সঙ্গে এগিয়ে আসবে আফ্রিকা ঘেঁষে থাকা মাদাগাস্কার দ্বীপও। ভারতের সঙ্গে এই দুই স্থলখণ্ডের প্রচণ্ড সংঘর্ষ হবে আজ থেকে ২০০ মিলিয়ন বছর পর। আর তার ফলেই নাকি জন্ম নেবে নতুন এক মহাদেশ। ভারতের যে বিলাসবহুল মুম্বইতে আজ রয়েছে বলিউডি জাঁকজমক, সেখানেই নাকি মাথা উঁচিয়ে থাকবে বিশাল এক পর্বত। হিমালয়ের চেয়েও উঁচু হবে সে পর্বতের চূড়া।
মহাসাগরীয় পাতের এই নাটকীয় পরিবর্তন দেখার জন্য আজকের পৃথিবীর কেউ বেঁচে থাকবে না। তবে ভবিষ্যতের সেই পৃথিবীর রূপ কল্পনা করাও তো কম রোমাঞ্চকর নয়!
ভূগর্ভস্থ পাত সারাবছরই চলমান। বছরে দুই থেকে তিন ইঞ্চি সরে থাকে এক একটি পাত। মাটির গভীরে এই পাতের নড়াচড়াতেই সাধারণত পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। আমাদের খুব চেনা হিমালয়ও মহাদেশ আর মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষেরই ফসল। তেমন আরও এক সংঘর্ষ হতে চলেছে সুদূর ভবিষ্যতে, জন্ম নিতে চলেছে আরও এক বিশালাকায় পাহাড়। আজ যে ভূখণ্ড দুই ভিন্ন মহাদেশের অংশ, ২০ কোটি বছর পর তারাই একসঙ্গে গঠন করবে নতুন এক মহাদেশ, তেমনটাই দাবি ডাচ গবেষকদের। আমেরিকান জার্নাল অফ সায়েন্সে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ২০২১ সালে।
টেকটোনিক প্লেট থিওরির উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে আজকের চেনা পৃথিবীর ছক। সুদূর অতীতে পৃথিবীর জন্মলগ্নে সবকটি মহাদেশ জুড়ে ছিল একটাই স্থলখন্ড। চারদিকে উত্তাল সমুদ্রের জলরাশির মাঝে ভেসে থাকত সেই স্থলভাগ, যার নাম প্যানজিয়া। পরে টেকটোনিক প্লেটের রদবদলের দলে টুকরো টুকরো হয়ে ভাগ হয়ে গেছে সমস্ত ভূখন্ড। জন্ম নিয়েছে সাত সাতটি মহাদেশ। তাতে গজিয়ে উঠেছে অজস্র জনবসতি। আজ থেকে ২০ কোটি বছর পর আবার তেমনই এক ওলটপালট কাণ্ড ঘটে যাবে এই পৃথিবীতে, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
আপনার মতামত লিখুন :