রউফুল আলম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি ফিলিপ হার্টগ শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইংল্যান্ডে বিজ্ঞপ্তি পাঠালেন। ব্রিটেনের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে খোঁজ দিলেন। বিশেষ করে ভারতবর্ষের যেসব মেধাবী তরুণরা ব্রিটেনে কাজ করেছে, তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে সেদিকে লক্ষ্য রাখলেন। তার এই প্রচেষ্টায় সবচেয়ে মেধাবী যে মানুষটাকে তিনি আনতে সক্ষম হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন জ্ঞানঘোষ। কেমেস্ট্রির শিক্ষক। জ্ঞানঘোষ যে কতো ব্রিলিয়ান্ট ছিলেন, সেটা দুই-তিনটা লেখায় বুঝানো সম্ভব নয়। আমি তাকে নিয়ে আলাদা করে একটা লেখা লিখেছিলাম। জ্ঞান ঘোষের বয়স যখন মাত্র চব্বিশ বছর, তখন সে নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী আরহেনিয়াসের কাজের সীমাবদ্ধতা খুঁজে পেয়েছিলেন এবং সেই কাজ কলকাতায় বসে শেষ করে, কেমেস্ট্রির সবচেয়ে খ্যাতনামা জার্নালে (ঔঅঈঝ) প্রকাশ করেছিলেন। জ্ঞান ঘোষ তখন মাস্টার্সের ছাত্র। একা সেই আর্টিকেল প্রকাশ করেছিলেন। এসব লোক একটা সমাজে কয়েক যুগে একবার জন্মায়।
একশো বছর আগে, পি. জে. হার্টগ যেটা করেছিলেন সেটা হলো ট্যালেন্ট হান্ট। দুনিয়া থেকে ছেঁকে ব্রিলিয়ান্টদের নিয়ে আসো। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত ছেলেমেয়ে সারা দুনিয়াতে গবেষণা করছে। অনেক বড় বড় অবদান রাখছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কি তাদের মধ্য থেকে হান্টিং করতে বেরিয়েছেন? অথচ একজন ভিসির অন্যতম প্রধান কাজ হলো ট্যালেন্ট হান্টিং নিশ্চিত করা। ভারতের বড় বড় প্রফেসারগণ আমেরিকার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে যান। সেখানে গিয়ে ভারতের মোস্ট টেলেন্টেড স্টুডেন্টদের খোঁজ নেন। যারা ভারতে ফিরে যেতে আগ্রহী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভারতের আইআইটিগুলো এভাবেই সেরা সেরা শিক্ষক পায়। তাদের হাত দিয়ে তৈরি হয় সেরা সেরা প্রোডাক্ট। যারা আজকে ভারতের মহাকাশ গবেষণাকে সমৃদ্ধ করছে। যারা আজকে ভারতের কেমিক্যাল এন্ড বায়োক্যাল রিসার্চকে সমৃদ্ধ করছে। যারা আজকে ভারতের এটমিক এনার্জি রিসার্চকে সমৃদ্ধ করছে। আমাদের ভিসিদের উচিত ট্যালেন্ট হান্টিংয়ে বের হওয়া। একশো বছর আগে হার্টগ করতে পেরেছেন। তাহলে আজকে পারছি না কেন? Rauful Alam-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।