শওগাত আলী সাগর: [১] মালালার বিয়ে নিয়ে বাঙালি সমাজের প্রতিক্রিয়াগুলো কৌতূহলোদ্দীপক। মনে হচ্ছে মালালাকে আমরা তার নিজের জীবনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে রাজি নই। [২] আমরা যারা বাংলাদেশের বাইরে থাকি, আমরা মনেপ্রাণে আমাদের সন্তানদের নিজ ধর্ম এবং সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত দেখতে চাই। নিজ ধর্মের, নিজ দেশের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক না হলে আমরাই ‘জাত গেলো জাত গেলো’ বলে হাউমাউ করে উঠি। কিন্তু মালালা যখন নিজ দেশের একজনকে বিয়ে করলো, তখনই তাকে নিয়ে আমরা আপত্তি জানাতে শুরু করলাম। মালালা নিজ দেশের, নিজ ধর্মের নিজ সংস্কৃতির কারও সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তাতে সমস্যা তো কিছু দেখি না। মালালা আমেরিকান, ইউরোপিয়ান, কানাডিয়ান কাউকে এমনকি অন্য ধর্মের কাউকে বিয়ে করলেও তাতে সমস্যসা খুঁজতাম না। কারণ তার জীবন তিনি কীভাবে যাপন করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তার পুরোটাই আছে।
[৩] এটা ঠিক, মাস চারেক আগেই মালালা বলেছিলেন, মানুষ কেন বিয়ে করে তিনি তা বুঝতে পারেন না। চার মাসের মাথায় তিনি নিজেই যদি বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বিয়ে করে ফেলেন, তাতে বিস্ময় জাগতে পারে, কিন্তু আমি তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করবো না। [৪] আমি বরং উন্মুখ হয়ে থাকবো জানার জন্য, নিজের জীবনের দর্শনকে আমূল পাল্টে দিয়েছে যে ভাবনা, সেই ভাবনাটি আসলে কী। তিনি যাকে বিয়ে করেছেন, তার সংস্পর্শে এসেই তিনি বিয়ের অপরিহার্যতা বুঝতে পেরেছেন, নাকি নিজ দেশের সংস্কৃতি কিংবা নিজের ধর্মীয় বিধান তাকে বিয়েতে উদ্বুদ্ধ করেছে, সেটিও নিশ্চয়ই আমরা জানতে পারবো। আমি সেটি জানারই চেষ্টা করবো। কিন্তু বিয়ে নিয়ে, বিয়ে করার জন্য মালালাকে সমালোচনা করবো না, তার প্রতি বাঁকা দৃষ্টি দেবো না। [৫] মালালার নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা। লেখক: কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক