এএইচ রাফি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: জেলার বিজয়নগর উপজেলায় একটি গ্রামের সড়কের নাম দীর্ঘদিন যাবত এক চিহ্নিত রাজাকারের নামে। এই সড়কের নাম বদল করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের দাবি, উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের অন্তর্গত 'দেলোয়ার হোসেন' সড়কের নাম বদলে একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ করা হোক।
সর্বশেষ চলতি বছরের গত ১০ অক্টোবর ইছাপুরা ইউনিয়নবাসীর পক্ষে সড়কটি থেকে রাজাকারের নামের বদলে একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে করার দাবি জানিয়ে গ্রামের বাসিন্দা হামদু মিয়া ও মজনু মিয়াসহ আরও কয়েকজন জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
এর আগেও রাজাকারের নাম বাতিল করতে কয়েক দফায় জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে দাবির বিষয়টি তুলে ধরেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদনে বলা হয়, ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামের মৃত ফুল মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তার নির্দেশে স্থানীয় আড়িয়ল বাজারের দক্ষিণ পাশের ব্রীজের গোড়ায় সাতজন নীরিহ মুক্তিকামীকে হত্যা করা হয়। এছাড়া দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে দালাল আইনের মামলায় দেলোয়ার হোসেন ৩ মাস ১০দিন কারাবাস করেন। এ অবস্থায় মুজিব শতর্বষে রাজাকার প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের নাম বদল করে খাদুরাইল গ্রামের সড়কটি একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণের দাবি জানানো হয়।
এর আগে ২০১৬ ও ২০২০ সালেও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করে রাজাকার দেলোয়ার হোসেনের নাম বদলে খাদুরাইল সড়কটির নাম বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে করার দাবি জানান বিজয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. তারা মিয়া।
এ বিষয় জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসাক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, 'যে কোন সড়কের নামকরণে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিজয়নগরের আবেদন করা সড়কের বিষয়েও আগে উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি সভায় নামকরণ বদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এরপর সেটি জেলা কমিটির কাছে পাঠালে- সেটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে সড়কের নামকরণ গ্যাজেট আকারে প্রকাশ হবে'।