মাসুদা ইয়াসমিন: [২] মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে শিল্প পুলিশ। শিল্প কারখানার সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরিতেও শিল্প পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। আমাদের পুলিশ যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা চ্যালেঞ্জ করতে পারে। শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর ১১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তিনি এসব কথা বলেন।
[৩] অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, আগে পুলিশ দেখে মানুষ ভয় পেতো, পুলিশের কাছে যেতনা। আর এখন সকল সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ পুলিশের কাছেই বেশি আসে। আগে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ, নৈরাজ্য লেগেই থাকতো। কিন্তু ২০১০ সালে শিল্প পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে স্বাচ্ছন্য বোধ করছেন।
[৪] সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা এবং সাহসের কারনেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি এই শিল্প পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেছেন বিধায় শিল্প খাতও এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আমাদের, তাই এদেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের প্রতিহত করার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। এজন্য পুলিশের সম্প্রসারন করা দরকার।
[৫] শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, জীবন ও জিবিকার জন্য শিল্পের চাকা সচল রেকেছে বিধায়, করোনা কালীন সময়ে দেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয় ঘটেনি। অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার জন্য তিনি পোশাক কারখানার মালিকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিল্প পুলিশের কাজ হলো বিশৃঙ্খলা এবং উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডকে রোধ করা। এজন্য সবাইকে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে শিল্প পুলিশকে সহযোগিতা করার আহন জানান।
[৬] অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ২০১০ সালে শিল্প পুলিশ প্রতিষ্ঠার পর আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছে। শিল্প পুলিশ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে যে কোন সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। আমাদের অর্থনীতির মূল শক্তি শিল্পের বিকাশ। এই শিল্পের বিরুদ্ধে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলাসহ পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শিল্প পুলিশের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আর শিল্প টিকে থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
[৭] বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনসহ শিল্প পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
[৮] এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম ও শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
[৯] আলোচনাসভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ডা. বেনজীর আহমেদ কন্ঠ শিল্পী সামিনা চৌধুরীর সাথে যৌথ সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে আগত প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ এসময় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।