খালিদ আহমেদ:[২] শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে আন্দরকিল্লা চত্বরে অনুষ্ঠিত গণঅনশন ও বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ দাবি জানান।
[৩] পূজা উদ্যাপন পরিষদের ঘোষিত ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজায় দীপাবলি উৎসব বর্জন ও কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে মন্দিরে অবস্থান কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
[৪] রানা দাশগুপ্ত শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি, ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দানসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। দুর্গাপূজায় মণ্ডপ ও মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, ঘরবাড়িতে লুটপাট এবং হত্যার প্রতিবাদে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সারা দেশে এ কর্মসূচির ডাক দেয়।
[৫] সকাল ছয়টা থেকে আন্দরকিল্লা চত্বরে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়। খণ্ড খণ্ড মিছিলসহ বিভিন্ন ব্যানার–ফেস্টুন নিয়ে তাঁরা গণঅনশনে যোগ দেন। এ সময় আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
[৬] রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সব মন্দির, বাড়িঘর পুনর্র্নিমাণের পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যদি গাফিলতি থাকে, তা তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
[৭] রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, যারা উসকানি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতার সময় যেসব জনপ্রতিনিধি এগিয়ে আসেননি, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তিনি আহ্বান জানান। এ ছাড়া বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করেন এই নেতা।
[৮] সমাবেশ থেকে ফেব্রুয়ারিতে এসব দাবির সমর্থনে চলো চলো ঢাকা চলো শীর্ষক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
[৯] পরিষদের নেতা ইন্দু নন্দন দত্ত বলেন, ৭৪ বছরে এই প্রথম সংখ্যালঘুরা রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্য এগিয়ে নিয়ে অধিকার আদায় করতে হবে। নির্যাতনের বিচার করতে হবে।
[১০] ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী বলেন, গণতন্ত্র ও মানবতা আজ বিপন্ন। বিচারহীনতার কারণে সাম্প্রদায়িক ঘটনা মাথাচাড়া দিয়েছে। অতীতের সহিংসতার বিচার এখনো হয়নি।
[১১] রণজিত দে বলেন, দেশের সব উপজেলায় মডেল মসজিদের মতো হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের জন্য উপাসনালয় করতে হবে।
[১২] চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল পালিত বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন চাই আমরা।’
[১৩] সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, পরিষদ নেতা চন্দন তালুকদার প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।