শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৫:৪৫ বিকাল
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২১, ০৫:৪৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রিতা রায় মিতু: কুমিল্লার ঘটনা দেশকে এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার গভীর একটা ষড়যন্ত্র!

রিতা রায় মিতু: প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান! কুমিল্লার কাজী তানিম যার বাসা পূজা মণ্ডপের একদম কাছেই সেই প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে ঘটনা এমন। কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে মূর্তির সঙ্গে কোরআন রাখার ঘটনা আমার এলাকার। আমার বাসার পাশেই মণ্ডপ। জানালা থেকেই সব দেখা যায়। কোরআন শরীফটা কাল রাতেই কেউ সেখানে রাখছে। যখন কেউ ওই মণ্ডপে ছিল না তখন।

এটা একটা আবাসিক এলাকা। আর এই মণ্ডপটা অস্থায়ী। শুধু দুর্গা পূজা উপলক্ষে ১০ দিনের জন্য বানানো হয়। পূজা শেষ হবার পরেই আবার মণ্ডপ ভেঙে ফেলা হয়। এখানে রাতে মানুষ থাকে না। আর নানুয়া দীঘির পারে রাতে এমনিতেও মানুষ সহজে বাইরে বের হয় না।

এমনকি কোনো প্রশাসনের লোকও কাল রাতে মণ্ডপ পাহারা দেয়ার জন্য সেখানে ছিল না। কারণ এই মণ্ডপ কখনো কোনো সমস্যা হয় নাই। তবে কাল রাতে কয়েকবার পুলিশের গাড়ি এসে পুরা এলাকা ঘুরে গেছে। এক জায়গায় কয়েকজন ছেলেকে এক সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

হয়তো প্রশাসনের আগে থেকে কিছু ধারণা ছিলো। কারণ এর আগে এতো বছরে কখনোই এই এলাকার পূজায় পুলিশ আসেনি। ধারণা থাকলে রাতে কেন পুলিশ মণ্ডপ পাহারা দেয় নাই সেটাও একটা প্রশ্ন। কাল রাতে পূজা মণ্ডপ খালি ছিল সম্পূর্ন। রাত প্রায় ৩-৪ টার দিকেই মণ্ডপ খালি করে সব বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়। সকালে পূজা শুরু হবার আগেই কোরআন শরীফটা কাল রাতেই কেউ সেখানে রাখছে। যখন কেউ ওই মণ্ডপে ছিল না তখন। শরীফটা এলাকা বাসীর নজরে পরে।

তখনও পুরোহিত আসেনি। পুরোহিত আসার পর পুরোহিত নিজে অনুরোধ করেছে যাতে এই কোরআন শরীফটা কাল রাতেই কেউ সেখানে রাখছে। যখন কেউ ওই মণ্ডপে ছিল না তখন। শরীফটা সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু এলাকাবাসী সেটা না করে প্রশাসনকে খবর দিয়ে পুজাই বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছে।

হিন্দুরা এটায় বাধা দেয়ায় প্রথমে বাইরে থেকে লোকজন এনে পুরা মণ্ডপ ভাঙ্গছে, প্রতিমা ভেঙে দীঘিতে ফালাইয়া দিসে, এরপর যেই হিন্ধুরেই সামনে পাইছে তারেই পিটাইছে। পাশ্ববর্তী কিছু মাদ্রাসা কমিটির লোকেরা এটায় নেতৃত্ব দিসে। এরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য গুলি চালাইসে।

এই মণ্ডপটাতে হিন্দুদের থেকে মুসলিমরা বেশি যায়। বছরের পর বছর ধরে আমাদের এলাকায় হিন্দু মুসলিম একসাথে মিলে মিশে থাকে। পূজায় হিন্দু মুসলিম একসাথে আনন্দ করে। কখনো কোনো সমস্যা হয় নেই।

এলাকার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যাই হিন্দু। আর বেশির ভাগ স্থানীয় বাড়ি ঘরও হিন্দুদের। সবাই এক সাথে বসবাস করে। আর এটাই কিছু মানুষ এর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াইছে। ইচ্ছা করে এই কাজটা করা হইছে দুই সম্প্রদায়কে আলাদা করার জন্য। বড় কোনো ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস মনে হচ্ছে।

আর কোরআন শরীফটা কাল রাতেই কেউ সেখানে রাখছে। যখন কেউ ওই মণ্ডপে ছিলো না তখন। শরীফটা রাখছেও এমন ভাবে যেন সবার চোখে পরে। একদম সামনের দিকে হনুমান মূর্তির কোলের উপর। হিন্দুরা তো এতো বলদ না যে এভাবে কুরআন রাখবে। এটা যে কেউ ইচ্ছা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর উদ্দেশ্যে করসে সেটা সহজেই বুঝা যায়।

কিন্তু ক্ষেপা পাবলিককে এটা বুঝবে কে। তারা একটার পর একটা গুজব ছড়াইয়া যাচ্ছে। কুরআন নাকি দুর্গার পায়ের নিচে রাখছে, কুরআন রেখে পূজা হইছে, পুরোহিতকে বলার পরও পূজা বন্ধ হয়নি।

এইগুলো বলে বলে মানুষকে আরো বেশি উসকে দিচ্ছে। অথচ কালকে রাতের পর এখানে আর পূজা হয়নি। আমার তো চোখের সামনে সব দেখা।

প্রশাসন যদি শক্ত না হতো তাহলে আজকে বহু হিন্দু মারা যাইতো। সকালের পরিস্থিতি যেমন ছিল পুলিশ যদি গুলি না চালাইতে তাহলে হয়তো রামু ট্র্যাজেডির চেয়েও ভয়াবহ কিছু হতো। দেশকে এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার গভীর একটা ষড়যন্ত্র!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়