গোলাম রাব্বানী: হাসিমুখে কথা বলা, ভালো ব্যবহার, সুন্দর-শালীন আচরণ হচ্ছে একটি নান্দনিক শিল্প। সুন্দর আচরণই একজন ব্যক্তির উন্নত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। এহেন শৈল্পিক গুণের অধিকারী স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সবার ভালোবাসা, সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। কারো সঙ্গে দেখা হলে সালাম দিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, কর্কশ ভাষা- রাগের সুর পরিহার করে হাসিমুখে কথা বলা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া, অন্যের দুঃখে সমব্যথী হওয়া, বিপদে সহানুভ‚তি ও সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য যেমন অর্থকড়ি লাগে না, তেমনি খুব গলদঘর্মও হতে হয় না। সুন্দর আচরণকারী মহান সৃষ্টিকর্তার পরম প্রিয়ভাজন।
আল্লাহ বলেন, তোমরা তোমাদের পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয়, এতিম, দরিদ্র, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথিক এবং যারা তোমাদের অধিকারে এসেছে, সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করো। (সূরা-নিসা-৩৬)। কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ জানাবে, প্রতি উত্তরে তুমি তাকে তার চেয়ে সুন্দর ধরনের সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততোটুকুই জানাও। (সূরা-নিসা-৮৬)। তোমরা তোমাদের পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও দরিদ্রদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার তথা সুন্দর আচরণ করবে এবং মানুষকে সুন্দর কথা বলবে। (সূরা-বাকারা-৮৩)। প্রিয় নবী করিম (সা.) ছিলেন সুন্দর ব্যবহারের মূর্তপ্রতীক। সদা সত্যভাষী, হিতভাষী, শুদ্ধভাষী, সুভাষী এবং মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণের জন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তিনি বলেন, মুমিন ব্যক্তি কখনো অভিশাপকারী, তিরস্কারকারী হতে পারেন না।
অশ্লীল বাক্যব্যয়ী ও অহেতুক বাক্যব্যয়ীও হন না। (তিরমিযী)। উত্তম কথা বা ভালো কথাও একটি সাদকা (দান-খয়রাত)। (বুখারী ও মুসলিম)। যে ব্যক্তি সুন্দর আচরণ থেকে বঞ্চিত, সে কল্যাণ থেকেও সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত। (মুসলিম)। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, পরিপূর্ণ মুমিন তিন নন, যিনি উপহাস করেন, অভিশাপ দেন, মন্দ ভাষায় কথা বলেন এবং যিনি বাচাল। তাই অপ্রয়োজনে কাউকে ধমক দেওয়া, কর্কশ ভাষা ব্যবহার করা কিংবা খারাপ আচরণ করার আগে কেবল এটুকু মনে রাখবেন, আল্লাহ্ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন অন্যদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে ও ভালো আচরণ করতে। সুন্দর আচরণকারী হলে সামনে-পেছনে মানুষের সমান প্রশংসা পাবেন, সবাই মন খুলে আপনার মঙ্গল কামনা করে দোয়া করবে। আর এর জন্য কোনো অসাধারণত্ব লাগে না, অতি সাধারণ একজন হয়েও এটুকু সাধারণ গুণাবলীই আপনাকে অন্যদের তুলনায় অসাধারণ করে তুলবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরস্পরের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করার, হাসিমুখে কথা বলার তাওফিক দান করুন। Golam Rabbani-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।