খালেদ মুহিউদ্দিন : ২০-২৫ বছর আগে যখন মেঘনা যমুনাতে সেতু হয়নি, সারা দেশের সব লোক ঢাকায় চলে আসেনি তখন মহাখালি গুলিস্তান গাবতলি কমলাপুর সদরঘাট বা সায়েদাবাদে এক বা দুইটাকায় পত্রিকা বিক্রি হতো। এরশাদ বাসন মাজছেন বা শাবানা গর্ভবতী এরকম খবর সাত আট কলামের মোটা কালো অক্ষরে ছাপা হতো সেখানে।
সম্পাদকদের নাম থাকত না সেইসব কাগজে, নামও হামেশা বদলে যেতো। কাউকে কখনো ওইসব কাগজের সম্পাদক দাবি করতে শুনিনি। মানে অত ব্যবসাসফল আর জনপ্রিয়তার ক্রেডিট তখন কেউ কেন নেননি, এখনও কোনো পক্ককেশ যৌবনে ওইসব করেছেন বলে ছবিসহ প্রমাণ দাখিল করেন না কে জানে?
রাস্তার গরমে, শীতে বসে থাকতে থাকতে অনেকে কিনতেন সেগুলো কিন্তু বাড়ি ফেরার আগেই বেশিরভাগ ফেলেও দিতেন, ওরকম কাগজ লেখাপড়া জানা লোক কোন লজ্জায় ঘরে নিয়ে যাবেন! আজকালও এ ধরনের খবর দেখতে পাই, সবচেয়ে রুচিশীল বলে দাবিদার গণমাধ্যমগুলোও তা প্রচার আর প্রকাশ করেন। বছরশেষে হাসিমুখে পোজ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকেরা আলেক্সা বা সোনালি রূপালি বোতাম দেখান।
উদাহরণ দিই। খবর দেওয়া হলো, মানে ভারতের এক টিভির দোহাই দিয়ে খবর দিছে যে ইন্দোনেশিয়ার একজন একটি রাইস কুকারকে বিয়ে করেছেন। দয়া করে নিজেদের লেখা বা প্রচার করা নিউজগুলো পড়েন রে ভাই, দেখেন কী লিখছেন? আমার মনে হয় আপনাদের মজাই লাগে তাই না, খানিক গর্বও বোধ হয় লাগে! বাহ কী দারুণ করে অডিয়েন্সকে টেনে আনা গেলো! হাত বাড়ালেই আলেক্সায় উঁচু আসন আর বোতামের রংধনু!
শেষে বলি, এই কীর্তি করতে যে এলেম লাগে তা অনেকেরই আছে। তাই দুইদিন পরে এর চেয়েও মজার কোনো খবর যেমন পুঁটি মাছের আরাম আয়েশের জন্য তিনটি প্রাসাদ, পান পাতায় করে আটলান্টিক পাড়ি, শেভ করলেন মোদি জাতীয় খবর সামাজিক গণমাধ্যমে দেখবেন আর সেমিনারে বলবেন সামাজিক গণমাধ্যমের চাপে হারিয়ে যেতে বসেছে মূলধারার গণমাধ্যম তার প্রস্তুতি নেন। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে