স্বকৃত নোমান: বাংলাদেশের আইনের কোনো ধারায় লম্বা চুল রাখা অপরাধ নয়। লম্বা চুলের প্রতি গ্রামের মোড়ল-মাতবরদের ক্ষোভ আছে। এখন দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরও ক্ষোভ। ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের’ শিক্ষক। অথচ এই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌদ্দ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিয়েছেন। লম্বা চুল বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও বটে। বিশাল বাংলার চাষাভুষারা আগে লম্বা চুল রাখতো, এখনো রাখে। আউল-বাউল-পীর-ফকিররা তো রাখেনই। কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা এখনো রাখেন। কেবল তাই নয়, মুসলমান মৌলবী-মাওলানারাও লম্বা ‘বাবরি চুল’ রাখেন।
সুতরাং লম্বা চুলকে বাঙাল মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বলা যেতে পারে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিভাগের শিক্ষক হয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিই বিদ্বেষ ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের। বিশ্ববিদ্যালয়টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রতিষ্ঠিত। রবীন্দ্রনাথের চুলও লম্বা ছিলো। ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন শিক্ষক, নরসুন্দর নন। অথচ তিনি নরসুন্দরের কাজ করেছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানেও লম্বা চুল রাখা অপরাধ নয়। আর শিক্ষার্থীরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়। তারা চুল লম্বা রাখবে, না খাটো রাখবে সেটা তাদের অভিরুচি। প্রাপ্তবয়স্ক চৌদ্দজন ছাত্রের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে শিক্ষকতার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন ফারহানা। লেখক: কথাসাহিত্যিক