সমকাল : রাজধানীর পল্লবীর একই কক্ষে স্বামী রোকনুদ্দীন আহমেদের লাশের পাশে অন্তত দু'দিন ধরে শুয়েছিলেন বৃদ্ধ স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন। ওই দম্পতির সন্তান পাশের কক্ষে থাকলেও জানতেনই না যে তার বাবা মারা গেছেন! প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সোমবার পুলিশ ৮০ বছর বয়সী রোকনুদ্দীনের লাশ উদ্ধার করেছে। অসুস্থ স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে একটি হাসপাতালে।
পুলিশ ও প্রতিবেশীরা বলছেন, রোকনুদ্দীন আহমেদ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক ছিলেন। শাহরিয়ার আহমেদ রূপম নামের ওই দম্পতির যে ছেলে পাশের কক্ষে ছিলেন তিনিও একটি মেডিকেল কলেজে পড়ালেখা করতেন। ওই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অবশ্য ৪০ বছর বয়সী রূপম পুলিশকে বলেছেন, দু'দিন আগে তিনি তার বাবা-মাকে তাদের কক্ষে গিয়ে দেখে এসেছিলেন। তখন তারা শুয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার দুপুরে ওই কক্ষ থেকে তিনি দুর্গন্ধ পান। তখন সেখানে গিয়ে দেখেন, তার বাবার শরীর ফুলে গেছে। মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। পাশেই তার মা অনেকটা অচেতন অবস্থায় শুয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটে বাইরের কাউকে বা কোনো আত্মীয়স্বজনকেও দেখা যেত না। ফ্ল্যাটের দরজা-জানালা প্রায় সবসময় বন্ধ থাকত।
পল্লবী থানার এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুরের দিকে তিনি পল্লবী ৭ নম্বর সেক্টরের ওই ফ্ল্যাটে যান। সেখানকার পরিবেশ দেখে 'অস্বাভাবিক' মনে হয়েছে। পাশের কক্ষে ছেলে থাকলেও তিনি জানতেনই না তার বাবা মারা গেছেন, মা অসুস্থ হয়ে লাশের পাশে পড়ে আছেন!
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, তারা ধারণা করছেন, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আগে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। দেহে অনেকটা পচন ধরেছে। ছেলের সঙ্গে কথা বলে তারা তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছেন।
ওসি বলেন, ছেলে রূপমের আচরণে মনে হয়েছে, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। যদিও তারা জানতে পেরেছেন তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়তেন। কিন্তু তা শেষ করতে পারেননি। বিয়ে করলেও সংসার টেকেনি।
পুলিশের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, রূপমকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, নিজের কক্ষ থেকে তিনি খুব একটা বের হতেন না। দরজা লাগিয়ে থাকতেন।
আপনার মতামত লিখুন :