শিমুল মাহমুদ: [২] রাজধানীতে এর প্রকোপ শুরু হলেও এখন ঢাকার বাইরে রোগী বেড়ে গেছে। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তদের দেওয়া তথ্য মতে শনাক্ত ২৭৫ জনের মধ্যে ৬৪ জন ঢাকার বাইরে এবং বাকি ২১১ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এরআগে চলতি মাসেই টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় শনাক্তের সংখ্যা ছিলো তিনশ’র বেশি।
[৩] মানুষের মুখে মুখে প্রশ্ন কবে নাগাদ ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মওসুম। অক্টোবরের আগে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক হচ্ছে না। গতকাল স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বক্তব্যেও এমন আভাস মিলেছে।
[৪] মন্ত্রী বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এর প্রধান কারণ এবার দীর্ঘ সময় ধরে চলা বিধিনিষেধ, ঈদের ছুটি। তবে আশা করছি এ মাসের মধ্যেই প্রকোপ কমে যাবে।
[৫] মন্ত্রী আরও বলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তারওপরে দীর্ঘসময় ধরে চলা বিধিনিষেধ, আবার ঈদের ছুটিতে মানুষ গ্রামের বাড়ি চলে যায়। যে কারণে পরিত্যক্ত স্থানে পানি জমে মশার জন্ম হয়েছে। অন্যদিকে নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে শ্রমিকেরা ছুটিতে থাকায় সেখানেও মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
[৬] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে চলতি বছরে দেশে ১৫ হাজার ৯৭৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এ বছর মোট ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
[৭] বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ৭২ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৮৫৭ জন ও দেশের অন্যান্য বিভাগগুলোতে ২১৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। চলতি মাসে এ পর্যন্ত মোট ৫ হাজার ৬২০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হলো।
[৮] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে ৭ হাজার ৬৯৮ জনের, জুলাই মাসে ২ হাজার ২৮৬ জনের, জুন মাসে ২৭২ জনের এবং মে মাসে ৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।
[৯] প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর মূল মৌসুম। চলতি মাসের শেষে অথবা অক্টোবরের শুরুতে ডেঙ্গু প্রকোপ কমে আসবে।
[১০] তিনি বলেন, সাধারণত এটা ডেঙ্গু জ্বরের সময়। তবে এবার বেশি হওয়ার কারণ হলো বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি। এই বছর মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয় আবার রোদ ওঠে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকে, যেখানে এডিস মশা ডিম পাড়ে। কিন্তু যদি মুষলধারে বৃষ্টি হতো তাহলে এ সমস্যা হতো না। এছাড়া এডিস মশা হলো এক ধরনের গৃহপালিত মশা, এরা সুন্দর ঘরে থাকতে পছন্দ করে। ফলে এই মশা ঘরে চলে যায় যেখান থেকে ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে।