মাসুদ আলম : [২] বিদেশে রপ্তানির জন্য কোনো কারখানার তৈরি পোশাক যখন ট্রাক-কাভার্ডভ্যানে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে যেতো, তখন রাস্তায় একটি অসাধু পরিবহন ও চোর চক্র সুকৌশলে প্রতিটি চালান থেকে কিছু মাল সরিয়ে ফেলতো। এতে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নের মুখে পড়ছিল সম্ভাবনাময় এ খাত। নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে গণনায় পণ্য কম পাওয়ায় বিদেশি বায়াররা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল বাংলাদেশি পোশাক পণ্য আমদানি থেকে। বিদেশি ক্রেতাদের ক্ষোভও ছিল দীর্ঘদিনের।
[৩] সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, রপ্তানির পোশাক চোর সিন্ডিকেটের এমনই সাত সদস্যকে শুক্রবার রাজধানীর উত্তরা ও কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূল হোতা সাহেদ ওরফে সাঈদ ওরফে সিলেটী সাঈদ, রাজ্জাক, ইউসুফ, মাইনুল, আলামিন, দুলাল হোসেন ও খায়রুল। তাদের কাছ ৪ হাজার ৭০৫ পিস গার্মেন্টস তৈরী পোশাকসহ ২টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়। সাহেদের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ২৪টি মামলা রয়েছে। তিনি চট্টগ্রামে ৬টি মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছিলো।
[৪] তিনি আরও বলেন, সাহেদ প্রায় ৫ সহস্রাধিক ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান থেকে বিভিন্ন সময় কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য চুরি করে। চক্রটি প্রথমে ঢাকার আশেপাশে পণ্য চুরি করলেও ডিবির অভিযানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। স¤প্রতি একটি পোশাক কারখানা থেকে ২৮ হাজার ৮২০ পিস তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি করা হয়। সেই চালান বিদেশে পৌঁছানোর পর ১১ হাজার পিস পোশাক কম পান বায়াররা। এ কারণে বিদেশি বায়ার বাংলাদেশি ওই কারখানা মালিককে ২৮ হাজার ৯০৮ ডলার ক্ষতিপূরণ বাবদ জরিমানা করে।
[৫] হাফিজ আক্তার বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য ঢাকা থেকে কাভার্ডভ্যানে চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার পথে চক্রটি পণ্য চুরি করতো। কোনো গার্মেন্টস থেকে শিপমেন্টের উদ্দেশ্যে ট্রাক- কাভার্ডভ্যান লোড হওয়ার পর চালক ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে ডিপো বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা বা গ্যারেজে গাড়ি ঢুকিয়ে খুব অল্প সময়ে কাভার্ডভ্যানের সিল অক্ষত রেখে প্রতি কার্টুন থেকে ২০-৪০ পিস সরিয়ে আবার আগের মতো কার্টুনগুলো স্কস্টেপ লাগিয়ে কাভার্ডভ্যান পোর্টে নিয়ে যেতো।