আনোয়ার হোসেন: [২] ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে ভাঙা কালভার্টে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। এটি উপজেলার বাঁচোর ইউনিয়নের বাজেবকসা গ্রামে অবস্থিত। রাস্তায় যাতায়াতকারী যানবাহন ও এলাকাবাসীর জন্য এটি যেন একটি মরণফাঁদ। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। হতে পারে প্রাণহানি। দীর্ঘদিন কালভার্টটি ভাঙা অবস্থায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযেগা এলাকাবাসীর।
[৩] উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন রানীশংকৈল-নেকমরদ মহাসড়ক ঘেঁষা মীরডাঙ্গী থেকে ঐতিহ্যবাহী কাতিহারহাট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক। শুধু মাত্র এই জরাজীর্ণ কালভার্টটির কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে এ সড়ক।
[৪] যার কারণে সড়কটিতে ভারি কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। হালকা যানবাহনও চলছে চরম ঝুঁকি নিয়ে।
[৫] সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার মধ্যখানে কালভার্ট। কালভার্টের ছাদের বড় অংশ ভেঙে পড়ে আছে। ভেঙে যাওয়া অংশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু ভেঙে যাওয়া অংশই নয়, পুরো কালভার্টটিই এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
[৭] স্থানীয়রা জানান, মীরডাঙ্গী হতে কাতিহারহাট সড়কের বাকসা সুন্দরপুর এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা সড়কের এই কালভার্টটি দুই ধাপে ভেঙে পাথরের ঢালাই উঠে খাল হয়ে প্রায় দুই ফিট করে দুই স্থানের রড বেরিয়ে পড়েছে। কালভার্টের ওপর দিয়ে সাইকেল মোটরসাইকেল দেখে শুনে চলাচল করা গেলেও রাতের আঁধারে অচেনা গাড়িচালক পথচারীরা পড়ে যেতে পারে বিপদে।
[৮] এ রাস্তা ধরেই শিক্ষার্থীদের আশপাশের স্কুল-কলেজে যেতে হয়। হাটবাজারে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে হয়। যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার ভাঙা কালভার্টের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটার আগেই কালভার্টটি সংস্কারের দাবি জানান তারা।
[৯] জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে কয়েকধাপে মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহারহাট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। পাকা সড়ক নির্মাণের পর থেকেই সড়কটিতে স্কুলের ছাত্রছাত্রী স্থানীয় মানুষসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ব্যাপকভাবে বেড়ে ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়ে পড়ে। তবে নতুন সড়ক নির্মাণের সময়েও বহু পুরোনো এই কালভার্টটি বেহাল থাকলেও নতুন করে নির্মাণ না করায় ভাঙা এই কালভার্ট নিয়ে বর্তমানে দুর্ভোগে রয়েছে পথচারীসহ স্থানীয়রা।
[১০] স্থানীয় সালাম জব্বার মান্নান বলেন, কালভার্টটি দেশ স্বাধীনের আগে নির্মাণ হতে পারে। কারণ ছোট থেকেই এটি আমরা দেখে আসছি। কালভার্টটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। তবে একদিকে সংস্কার করার বছর না ঘুরতে আরেক দিকে ধসে সেতুর রড বেরিয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় কৃষক শ্রমিক যানবাহন চালকসহ পথচারীরা।
[১১] উপজেলা প্রকৌশলী অফিস বলছে, মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহার সড়কটি আমাদের উপজেলা সড়ক ক্যাটাগরিতে পড়ে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কের মধ্যে থাকা পুরোনো কালভার্টি এরই মধ্যে দুবার সংস্কার করা হয়েছে। তাছাড়াও নতুন করে নির্মাণ করার জন্য একাধিকবার বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দসহ টেন্ডার হলেই সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
[১২] এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, খুব শিগগির সেতুটি পুর্নির্মাণ করা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, কালভার্টটি খুব ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত নির্মাণের তাগাদা দেব। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস