মাসুদ আলম : [২] শনিবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শুক্রবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গাড়ি ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা আজিম উদ্দিন, রফিক উল্লাহ, সেলিম, কামরুল হাসান ও ওমর ফারুক। তাদের কাছ থেকে মোবাইল, চাকু, দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল, ৩টি পিকআপ, ১টি সিএনজি ও ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
[৩] তিনি আরও বলেন, চক্রটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত। চক্রের ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় এই চক্রটি। গত চার-পাঁচ বছর ধরে এই চক্রটি প্রায় ২০ থেকে ২৫টি জায়গায় গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে তারা। চক্রটি প্রথমে চালকদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে কিংবা অন্য কোনও কৌশলে গাড়ি চুরি করে। অনেক সময় তাদের চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অজ্ঞান করে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়।
[৪] তিনি বলেন, পরে চক্রটি গাড়ির মালিককে ফোন করে টাকা দাবি করে। টাকা পেলে কোনও একটি জায়গায় গাড়ি ফেলে যায়, আর না পেলে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রি করে দেয় ধোলাইখালে। র্যাব বলছে। চোরাই বিভিন্ন গাড়ি ও যন্ত্রাংশ রাজধানীর ধোলাইখালে বেশ কয়েকটি দোকানে বিক্রি করতো। গাড়ি বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে চুরি করে মালিকদের কাছ থেকেও প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
[৫] মঈন বলেন, মূলত ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে গাড়ি চুরি করে চক্রটি। এছাড়া কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুরেও সক্রিয় তারা। চক্রের সদস্যরা চোরাই গাড়ির রঙ পরিবর্তন করে নামও পরিবর্তন করেন। পরবর্তী সময়ে তারা এসব চোরাই গাড়ির বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে কম মূল্যে বিক্রি করেন। বিক্রিতে কোনও সমস্যা হলে যন্ত্রাংশ খুলে পরবর্তী সুবিধামতো সময়ে অন্য গাড়িতে স্থাপন করে বিক্রি করেতেন তারা।
[৬] তিনি আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা আজিমের তিনজন ঘনিষ্ট রয়েছে, যারা চোরাই গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি, ভূয়া নম্বর প্লেট তৈরি, চোরাই গাড়ি মালিকদের সঙ্গে দাবিকৃত অর্থ আদায়ের সমন্বয় করার দায়িত্ব পালন করেন। মাদক চোরাকারবারীসহ বিভিন্ন চোরাকারবারীতে এসব চোরাই গাড়ি ব্যবহৃত হয়েছে। তাদের সঙ্গে আজিমের পরিচয় মূলত জেলে। একসঙ্গে থাকার সময় তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে।
[৭] তিনি বলেন, চক্রটি মুহূর্তেই যেকোনো গাড়ির লক (তালা) ভাঙা কিংবা বিকল্প চাবি ব্যবহার করে গাড়ি চালু দিয়ে চুরি করত । এমনকি গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ডিভাইসও বিকল করে গাড়ি নিয়ে পালাত তারা।