বাবুল আক্তার: [২] যশোরের চৌগাছায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সাংসদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে কাদামুক্ত হলো ৯ কি.মি. কাচা রাস্তা। টিআর, কাবিখা ও কাবিটার সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে টেকসই উন্নয়নের নিয়ম থাকলেও এর আগে কেউ তা করেননি। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সাংসদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদের ৮৯ টি কাঁচা রাস্তা ইটের সোলিং করে কাদামুক্ত করা হয়েছে।
[৩] জানাযায় টিআর, কাবিখা ও কাবিটার বরাদ্দ থেকে ৭০ শতাংশ এবং উপজেলা প্রশাসনের সাধারণ তহবিলের বরাদ্দ মিলিয়ে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় ব্যয়ে ৮৯ টি কাচা রাস্তার ৯ কি.মি. ইটের সোলিং করা হয়েছে।
[৪] উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে প্রতি বছর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য ও টাকা কর্মসূচির (কাবিখা ও কাবিটা) বরাদ্দের টাকায় গ্রামের রাস্তাগুলো শুধু মাটিভরাটের কাজ করা হতো। যা দীর্ঘস্থায়ী কোনো উন্নয়নের কাজে আসতোনা।
[৫] এমনকি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) মাধ্যমে সড়ক পাকা ও পিচ ঢালাইয়ের যে কাজ করা হয় তা প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব ছোট রাস্ত পর্যন্ত খুব বেশি পৌঁছায় না। ফলে গ্রামের কাদার রাস্ত উন্নয়নে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এজন্য গ্রামীন জনপদের রাস্তাগুলোর কাদা তাদের নিত্য সঙ্গি ছিলো।
[৬] উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে টিআর এবং কাবিখা ও কাবিটার ৭০ শতাংশ দিয়ে রাস্তা পাকা করার সুযোগ থাকলেও আগে কোনো সাংসদ বা উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নেয়নি। বিগত দিনে শুধু মাটি ভরাটের কাজ হয়ে আসছিল। যা সরকারি অথের্র অপচয় হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি অর্থের এই অপচয় রোধ এবং গ্রামের অধিক কাদা হওয়া রাস্তার দ্রুত উন্নয়ন করতে স্থানীয় সাংসদ মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডাক্তার নাসির উদ্দিনের পরামর্শে টিআর-কাবিখার টাকায় রাস্তা ফ্ল্যাট সোলিং (ইট বিছানো) করার সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।
[৭] সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ২০২০-২১ অর্থবছরে টিআর ও কাবিখার ১ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ৮৪০ মিটার অর্থাৎ ৮ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা ইট বিছিয়ে কাদা মুক্ত করা হয়েছে।
[৮] উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এনামুল হক ও সাংসদ মহোদয়ের দৃঢ় অবস্থানের কারনে এ কাজ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন ‘গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সাংসদের আনুকূল্যে আসা কাবিখা, কাবিটার বিশেষ বরাদ্দে ৭৩ লাখ টাকায় ৩০টি কাদার রাস্তা, ১২ হাজার ফুট ইট বিছিয়ে পাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের হাতে থাকা সাধারণ বরাদ্দে ৫০ লাখ ১৭ হাজার টাকায় ২৬টি রাস্তা ১০ হাজার ৪০০ ফুট সোলিং করা হয়। পাশাপাশি সাংসদের মাধ্যমে টেস্ট রিলিফের (টিআর) ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ৩৩টি রাস্তার ৬ হাজার ৬০০ ফুট সোলিং করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৮৯টি সড়ক ইটের সোলিং করে কাদা মুক্ত করা হয়েছে।’
[৯] চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী টিআর-কাবিখা বরাদ্দের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সড়ক ইট দিয়ে পাকা করার সুযোগ রয়েছে। এমপি মহোদয়ের পরামর্শে নীতিমালার আলোকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বর্ষাকালে বেশি কাঁদা হওয়া রাস্তগুলো সোলিং করা হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
[১০] এ দিকে রাস্তা ইট দিয়ে পাকা করে দেওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন উপকারভোগী এলাকাবাসী।