বাশার নূরু: [২] বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে কথা বলতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
[৩] বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘মোবাইল কোর্টটা হচ্ছে অনলি স্পট। যেখানে ঘটনা ঘটবে সেখানেই করতে হবে। এটা চেম্বারেও বসে করার সুযোগ নাই। থানায় বসে করারও সুযোগ নেই।’
[৪] একইসঙ্গে আদালত নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। ২৬ আগস্টের মধ্যে এ ব্যাখ্যা দিতে হবে।
[৫] শুনানির এক পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় সাজা দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘মিস্টার অ্যাটর্নি জেনারেল, আপনি আছেন ভালোই হয়েছে। আমি যতটুকু নিউজে পড়ে জেনেছি ম্যাজিস্ট্রেট রাজিয়া সুলতানা তার চেম্বারে বসে অর্ডারটা পাস করেছেন। এটা কি তিনি করতে পারেন?’ তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মাই লর্ড এটা হয়তো অন্য বিষয়। এতে তিনি প্রসিডিউর লংঘন করেছেন।’
[৬] বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘শুধু প্রসিডিউর না, সবটাই আপনাকে দেখতে হবে। আপনি দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল, ল কোথায়, কীভাবে লংঘন হয় সেটা আপনাকে দেখতে হবে।
[৭] বিচারক বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে- আমরা পত্রপত্রিকায় দেখি হয়তো ঘটনা ঘটেছে। হয়তো শাস্তিযোগ্য অপরাধ, কিন্তু দেখা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটরা দুই দিন, তিন দিন পরে গিয়ে মোবাইল কোর্টে সাজা দিয়ে দেয়। সুতরাং এগুলো আপনারা সরকারি পর্যায়ে বলেন। ম্যাজিস্ট্রেটদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং হয়, সেখানে মোবাইল কোর্ট কীভাবে পরিচালনা হবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হোক।’
[৮] আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করে বিচারক বলেন, ‘এই কিছু দিন আগে বরগুনা বা পিরোজপুরে দিকে হবে সম্ভবত। এক লোকের ক্ষেতে পাখি গিয়ে ফসল নষ্ট করেছে বলে শতাধিক পাখি সে মেরে ফেলেছে। নিঃসন্দেহে এ ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে আমি যতটুকু দেখছিম দুই-তিন দিন পরে গিয়ে মোবাইল কোর্ট ওই ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছে। মোবাইল কোর্টের স্পিরিট কিন্তু এটা না। এ ধরনের অনেকগুলো বিষয় পত্রিকায় দেখেছি। ‘আপনারা একটু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে বলেন, ওনাদেরও প্রশিক্ষণের ব্যাপার আছে।’ এ সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলও আদালতের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ‘মোবাইল শব্দটাই তো চলমান।’ পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে কথা বলবো।’
[৯] নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে বুধবার চিঠি লেখেন সুপ্রিকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে বুধবারই শিশু দুটিকে মুক্তির নির্দেশ দেয়।