শিরোনাম
◈ অ‌ক্টোব‌রে বাংলাদেশ সফরে ৩‌টি ক‌রে ওয়ান‌ডে ও টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌বে ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ ◈ ভুয়া ফুটবল দল সাজিয়ে জাপান-যাত্রা, ধরা পড়ে ফেরত পাঠিয়েছে ২২ জনকে! ◈ উচ্চশিক্ষার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ, সাথে আর্থিক সহায়তাও মিলবে ◈ সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ◈ আঞ্চলিক হুমকি নিয়ে ভারতের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে মৌলবাদ, চীন সীমান্ত অচলাবস্থা ও পাকিস্তানের ভূমিকা ◈ ইরানে অনুপ্রবেশ করে নারী মোসাদের দুর্ধর্ষ অভিযান (ভিডিও) ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, বরুশিয়ার নি‌শ্চিত জয় রুখে দিলো জুভেন্টাস ◈ দূর্গা পুজাতে ভারতে গেল ৮ ট্রাক ইলিশ ◈ এমবাপ্পের দুই পেনাল্টি গোলে চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লি‌গে রিয়াল মাদ্রিদের শুভ সূচনা ◈ যে কারণে শিবির ক্যাম্পাসে জিতছে, সেই কারণেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে জিততে পারে: দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ

প্রকাশিত : ২৯ জুলাই, ২০২১, ১২:২৭ রাত
আপডেট : ২৯ জুলাই, ২০২১, ১২:২৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভাসানচরে সেপ্টেম্বর থেকে যুক্ত হচ্ছে জাতিসংঘ

নিউজ ডেস্ক: কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে জাতিসংঘ। ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার ওই সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আগস্টের প্রথমার্ধে সইয়ের পর সেপ্টেম্বর থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করবে জাতিসংঘ।

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের যুক্ততা নিয়ে যে এমওইউ সই হবে তার খসড়া নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আলোচনায় বসেছিলেন। তৃতীয় দফা আলোচনার পর ওই সমঝোতা স্মারকের খসড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ সম্মত হয়েছে। মূলত ভাসানচরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কীভাবে কার্যক্রম চালাবে, সে বিষয়গুলো চার পৃষ্ঠার ওই খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকায় জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের একটি বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানান। প্রথম আলো

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের চাপ কমাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। সরকার এখন পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়ন এবং দেশি–বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে যুক্ত করে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ভাসানচরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের কার্যক্রম কবে শুরু হবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আজ বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে যুক্ততার বিষয়ে যে সমঝোতা স্মারক সই হবে তার খসড়া নিয়ে দুই পক্ষ আজ সম্মত হয়েছে। মূলত এরই আলোকে ভাসানচরে কার্যক্রম চালাবে জাতিসংঘ। আশা করছি আগস্টের শুরুতে এটি সই হওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে ভাসানচরে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করবে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের ভাসানচরের কার্যক্রম কক্সবাজারের মতো হবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরের পরিবেশ ও পরিস্থিতি যেহেতু ভিন্ন, কার্যক্রমের ধরনও হবে আলাদা। কক্সবাজারে শুরু থেকেই জাতিসংঘকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজর দিতে হয়েছে। সে তুলনায় ভাসানচরে কিছুটা ভালো পরিস্থিতিতে মানবিক কার্যক্রম চালাবে জাতিসংঘ।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকার কর্মসূচি, যাতায়াতসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করে কাজের পরিধি ঠিক করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের শিক্ষাকার্যক্রম মিয়ানমারের ভাষায় এবং সে দেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পরিচালিত হবে। অর্থাৎ, রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরে গিয়ে যাতে সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে এটা করা হয়েছে।

ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জীবিকার কর্মসূচির ধরনের বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষার মতো কাজের ক্ষেত্রেও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে মিয়ানমার, মানে রাখাইনের পরিস্থিতি। ভাসানচরের থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে জীবিকার জন্য তৈরি না করে তাদের আদিনিবাসের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের অন্যতম প্রধান আপত্তি ছিল মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির অবাধ চলাচলে বিধিনিষেধ। সম্মত খসড়ায় স্বাস্থ্যগত বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ভাসানচর থেকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তাদের ভাসানচরে ফিরে যেতে হবে।

প্রসঙ্গত ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে শুরু থেকেই জাতিসংঘ বিরোধিতা করে এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ভাসানচর কতটা ঝুঁকিমুক্ত, রোহিঙ্গাদের অবাধে ভাসানচর থেকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত, তাদের স্বেচ্ছায় ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে কি না, এ বিষয়গুলো নিয়ে জাতিসংঘের প্রশ্ন ছিল। সরকার কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরের স্থানান্তরের কাজ শুরু করে অব্যাহত রাখার একপর্যায়ে সেখানে একটি কারিগরি দল পাঠায় জাতিসংঘ। কাছাকাছি সময়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), ঢাকায় পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের পর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দুই সহকারী হাইকমিশনার ভাসানচর সফর করেন। এসব সফরের পর জাতিসংঘের কারিগরিদলসহ প্রতিনিধিদল ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় দফায় মিয়ানমারের ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু, নারী ও পুরুষের সংখ্যা যথাক্রমে ৮ হাজার ৭৯০ জন, ৫ হাজার ৩১৯ জন ও ৪ হাজার ৪০৯ জন।

আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর এম রাশেদ সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে গেলে সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরের শুরুতে এক লাখ রোহিঙ্গার অবশিষ্টদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়