রাশিদ রিয়াজ : বছরে ৩০ কোটি স্পুটনিক টিকা তৈরি করবে সেরাম ইনস্টিটিউট। চুক্তি হয়ে গেছে। এই টিকার প্রযুক্তি আমদানিতে আগেই সেরামকে অনুমতি দিয়েছিলো ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া। ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত যখন বলেন অনুমোদন পেলেই দুটি টিকা উৎপাদন দ্রুত শুরু করা যাবে তখন লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে। রাশিয়া স্পুটনিক টিকা উৎপাদনের অনুমোদন চেয়ে বসে আছে। বঙ্গভ্যাক্সের কোনো ভালো খবর নেই। অথচ বিশে^র দেড় শতাধিক দেশে বাংলাদেশ ওষুধ রপ্তানি করে। টিকা তৈরিতে রকেট টেকনোলজি লাগে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে আগেভাগেই টিকার জন্য আলাদা বরাদ্দ দিয়েছেন। সর্বোচ্চ টিকাদাতা ১০ দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে থাকা ব্রাজিল ১১ কোটি ৪০ লাখ টিকা দিয়েছে। টিকার জন্যে দেশটিতে বিক্ষোভ, মিছিল হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট বলসোনারো টিকা দানের বিরুদ্ধে ছিলেন। বলেছিলেন, টিকা দিলে পুরুষরা কুমির আর নারীদের দাঁড়ি গজাবে।
৪২ বছর ধরে ইরান নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধে জর্জরিত হয়েও নিজেরা ৬ কোটি স্পুটনিক টিকা কেনার পর রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একই টিকা বানাচ্ছে। কিউবা, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে ইরান। এছাড়া নিজেরা তিনটি টিকা উৎপাদন করছে। আর আমরা এখনো এক কোটি টিকা দিলেও তাদের সবাই দুটি ডোজ পায়নি। এ হারে টিকা দিতে ১০ বছর লেগে যাবে। ততোদিনে আমাদের জীবন-জীবিকা কোথায় দাঁড়াবে? অর্জিত উন্নয়ন রক্ষা করা যাবে কি? বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির মডেল বিশে^র অনেক দেশ মডেল হিসেবে অনুসরণ করে আসছে। করোনা সংক্রমণের হার ৩২ শতাংশের ঘুরাফেরা করছে। শিক্ষামন্ত্রী বলে রেখেছেন ৫ শতাংশের নিচে নামলে স্কুল খুলবে। অভিভাবকরা বেতন দিয়ে যাচ্ছেন। অনলাইনে ক্লাসের নামে ‘নকলের ফাজলামি’ চলছে। কোটি কোটি টিকার আশ^াস শুনছি। মাঠে টিকা নিতে হাজার হাজার মানুষের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। টিকা উৎপাদনে যেতে পারছি না কেন? মানুষের মৃত্যুসংখ্যা বাড়ছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে ধস নামছে। ঈদের পর গার্মেন্টস বন্ধ হবার কথা বলা হচ্ছে। আমরা যাচ্ছি কোথায়?