আখিরুজ্জামান সোহান: চলছে কোপা মৌসুম। লাতিন আমেরিকার শীর্ষ লড়াইয়ে দুই মহারথী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখী এবারের কোপা আমেরিকার ফাইনালে। মাঠের সে লড়াই উত্তাপ ছড়িয়েছে ব্রাজিলিয়ান রাজনীতিতেও।
ব্রাজিল- আর্জেন্টিনার কূটনৈতিক সর্ম্পক জোড়ালো হলেও ফুটবলের লড়াইয়ে বারাবরই এক অপরের চির-প্রতিদ্বন্দী এই দুই দেশ।এ কারণে এই দুই দলের লড়াইকে ‘ব্যাটল অব আমেরিকাস’ নামে অভিহিত করা হয়। সেই জোরালো উত্তাপ আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ছড়িয়েছে দক্ষিন এশিয়ার ছোট্ট দেশ আমাদের বাংলাদেশেও।সকালের সূর্য যখন রাঙিয়ে দেয় ছোট্ট এ ব-দ্বীপ, গোলার্ধের অন্য দিকের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনায় তখন সন্ধ্যার অস্তরাগ। ওই অত দূরের দেশ দুটোর জন্যও আমাদের সমর্থনের কী পাগলপারা অনুরাগ!
ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা আমাদের দেশে প্রথম নয়, পেলে- ম্যারাডোনা থেকে যে শেকড়ের শুরু সেই শেকড়ের ডাল পালা হিসেবে যোগ দিয়েছে মেসি নেইমাররা।
প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে কিংবদন্তীর পরিবর্তন হলেও দেশ দুটির প্রতি ভালোবাসা রয়ে গেছে সেই বাবাদের আমল থেকেই। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মুখোমুখিতে আমরা তাই উত্তেজনায় কাঁপি। উন্মাদনায় ভাসি। বলুন তো, কী হবে, যদি প্রিয় মেসির হাতে কোপার ট্রফি না ওঠে? কিংবা প্রিয় ব্রাজিল যদি আরেক মারাকানা-ট্র্যাজেডির শিকার হয়? হয়তো কিছুই না। কিন্তু সমর্থনের ব্যাপারটাই তো এমন! যে কারণে প্রিয় দলের ব্যর্থতার আশঙ্কায় সর্বস্ব হারানোর ভয় করি। কিংবা সাফল্য-সম্ভাবনায় যাপিত জীবনের সমস্ত গ্লানি মুছে যাওয়ার আশা দেখি।
তবে অনুরাগে ভাটা পরে অতিউৎসাহীদের কর্মকান্ডে। দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই চলবে এটা স্বাভাবিকই বলা চলে, কিন্তু বিপত্তি বাঁধে কথার লড়াই যখন সংঘর্ষে রূপ নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাম্মণবাড়িয়া এবং চট্টগ্রামে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছে, আমরা কি তবে আক্ষরিক অর্থেই ব্রাজিল- আর্জেন্টিনার ‘ফ্যানবয়’ হতে পেরেছি নাকি ‘ফাইটবয়’ হয়ে বিশ্ব দরবারে নিজেদের দেশের ইমেজকে নেতিবাচক দিকে ঠেলে দিচ্ছি। ভাবতে হবে এখনই!