হাসান মামুন: এসির মধ্যে না থাকা, খেটে খাওয়া আর গরিব এবং মফস্বল শহর ও গ্রামে থাকা লোকজনের করোনা হয় না, হলেও মারাত্মক কিছু ঘটবে না এসব যার ভিত্তিতেই বলা হোক; বিজ্ঞান একে সমর্থন করেনি কখনো। কিন্তু কিছু লোক এসব কথাবার্তা চালিয়ে গেছি। করোনাক্রান্ত দুনিয়ার কোথায় কী ঘটছে, কারা আক্রান্ত হচ্ছে, সাফার করছে আর বেশি মারা যাচ্ছে- সেদিকেও না তাকিয়ে কথাগুলো বলে গেছি অনেকে। যেসব দেশে বিশেষজ্ঞরা কারও মুখের দিকে না তাকিয়ে ভয়ডরহীনভাবে কথা বলেন, তাদের সতর্কবাণীও শুনিনি; বুঝতে চাইনি অনেকে। একেবারে নাকের কাছে, বাড়ির পাশে ভারতে কী ঘটছিলো সেদিন, সেটাও কেবল ওই দেশের ব্যাপার ভেবেছি। আর কিছু লোক তো ছিলোই, তারা বলে চলেছেন- ‘সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই’। রাজধানীর দেয়ালেও চিকা মেরে দিয়েছেন।
যেকোনো জমায়েত থেকেই যে প্রাণঘাতী করোনা ছড়াতে পারে, তারা এটা উড়িয়ে দিয়ে লোকজনকে দিয়েছেন উল্টো বাতাস। ভ্যাকসিন বা টিকা নিয়েও বিভ্রান্তি কম ছড়াননি। পরিচিত অনেককেই দেখেছি, এ নিয়ে হাসিঠাট্টা করে টিকাটা নেননি। একাধিক ষড়যন্ত্র তত্ত্বও ফেরি করা হয়েছে। আর দেশ যারা চালান বলে দাবি করছেন, তারা সত্যি বলতে এসব মোকাবেলা করতে পারেননি। দায়িত্ব পালনে আলাদা করেও তাদের ব্যর্থতা কম নয়। এখন তো নাকি ৫০ শতাংশ করোনাক্রান্ত রোগী আসছে ওই এসির মধ্যে না থাকা, বস্তি ও সেমিবস্তিতে থাকা, গ্রামে বাস করা আর গরিব জনগোষ্ঠীর ভেতর থেকে এবং তাদের সিংহভাগই মুসলমান। ‘প্রকৃত মুসলমানদের’ করোনা হবে না, এ প্রচারণাও কম খায়নি মানুষ। কী দেশ বানালাম আমরা এতো আত্মত্যাগের বিনিময়ে! এতো গল্প করি অতীতের গৌরব নিয়ে; কিন্তু চলমান ব্যর্থতার লজ্জা তো স্পর্শ করে না আমাদের। ফেসবুক থেকে