রাশিদ রিয়াজ : নাইন ইলেভেনের পর ২০০১ থেকে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে ৭ হাজার ৫৭ জন মার্কিন সেনা মারা গেলেও একই সময়ে ৩০ হাজার ১৭৭ জন সেনা আত্নহত্যা করেছেন। এদের বিশাল সংখ্যক হতাশ হয়ে আত্নহত্যা করেছেন যুদ্ধাহত হবার পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্টস অব ওয়ার প্রজেক্টের প্রতিবেদনে এধরনের আত্মহননের কারণ সন্ধান করে বলা হয়েছে উন্নত বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার, মানসিক আঘাত সামাল দিতে না পারা, ট্রমা, সামরিক সংস্কৃতি, প্রশিক্ষণের ভার বহন করতে না পারা, অস্ত্রের বিস্তৃত উপলব্ধি এবং বেসামরিক জীবনে ফিরে আসার জন্যে তীব্র আকাঙ্খায় হতাশ হয়ে পর্যুদস্ত হয়ে পড়া।
এছাড়া ঘন ঘন সেনা মোতায়েন ও স্থানান্তর, একাধিক আঘাতজনিত কারণে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ও শারীরিক ক্ষত এসব সেনাদের আত্মঘাতী আচরণের পথে নিয়ে যায়। তারা ঝুঁকিপূর্ণ জীবন সংগ্রাম থেকে নিজেকে লুকাতে চেয়ে আত্মহনন করে বসে। সেনাবাহিনীতে সক্রিয়া থাকতে সক্ষম হওয়ার পরিবর্তে যুদ্ধাহত হয়ে থাকা হতাশ হয়ে ওঠার আরেক কারণ। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বিভিন্ন দেশে ১’শ জন স্বাভাবিক মৃতুর বিপরীতে ১ জন আত্মহত্যা করে আর মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২০০০ থেকে ২০০৯ সালে এ হার ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ২০১১ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ১৯৩ জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ১০৬৭ রিজার্ভ সেনা আত্মহত্যা করেছে। এর পাশাপাশি গত দুই দশকে ৫ হাজার ১১৬ সক্রিয় সেনা সদস্য আত্মহত্যা করেছে।
মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা বলছেন সন্তাসের বিরুদ্ধে বিশ^যুদ্ধের খরচের বিপরীতে মার্কিন সেনাদের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সামাল দিতে কতটা খরচ হচ্ছে তা যাচাই করার সময় এসেছে। কারণ এ যুদ্ধে আর্থিক ব্যয়ের চেয়ে আমাদের সেনাদের পঙ্গুত্ব বহন করার ব্যয় ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ের তুলনামূলক মূল্যায়ন করার সময় এসেছে বলে কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্টের সহ-পরিচালক স্টিফেন সাভেল।