শওগাত আলী সাগর: [১] সিবিসি টেলিভিশনের ন্যাশনাল নিউজের প্রধান শিরোনামে বাংলাদেশের নাম শুনে মনটা খারাপ হয়েছে। ‘অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশ আবার লকডাউনে গেছে’Ñ এই ছিলো শিরোনাম। বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি বাংলাদেশের কোভিড পরিস্থিতির দিকে আছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ভারতের জায়গাটা বাংলাদেশ নেবে- সেটা নিশ্চয়ই আমরা কেউই চাই না।
[২] সরকার যখন লকডাউনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়, তখন বুঝতে হবে পরিস্থিতি তেমন একটা সুবিধার না। গত দেড় বছর ধরেই দেশে লকডাউন হয়েছে, কিন্তু সেটি কার্যকর করার ব্যাপারে সরকারকে তেমন একটা মনোযোগি মনে হয়নি। এই প্রথম মনে হচ্ছে সরকার বেশ সিরিয়াস। এর অর্থটা কারও না বোঝার কারণ আছে বলে মনে হয় না।
[৩] ফলে এই সময়ে লকডাউনকে সবারই পুরোপুরি সমর্থন দেওয়া দরকার। লকডাউনটাকে ঈদ পর্যন্ত টেনে নিতে হবে এবং সেজন্য সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা দরকার। সরকার না করলে ব্যক্তি মানুষকেই সেটা করতে হবে। মিডিয়া এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সবাই মিলে একই সুরে জনস্বাস্থ্য এবং জনস্বার্থের বিষয়টার দিকে ফোকাস করা দরকার। ‘মানুষ কথা শুনে না-’ এসব কথা তো অনেক হয়েছে। এবার অন্তত মানুষকে কথা শোনানোর চেষ্টা করি না কেন।
[৪] পশ্চিমা দেশগুলোর মতো বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে না, মারা যাচ্ছে নাÑ এ ধরনের যুক্তি আত্মঘাতী। বেশি মানুষ মারা না গেলে, সংক্রমিত না হলে আমরা তার দিকে মনোযোগ দেবো না- এ ধরনের ভাবনা কোনো মানুষ ভাবতে পারে বলে মনে করি না। [৪] আরেকটা কথা বলি। কোভিড যতো মানুষের মধ্যে ছড়ায়, হোক কেউ টের পেলো বা পেলো না, কোভিড যতো মানুষের মধ্যে ছড়ায় ততো বেশি তার রূপান্তর ঘটে, মিউটেড হয়। অনেকটা প্রজননের মতো। কোভিড যতো মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়, ততো নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরির সুযোগ হয়, কোভিডের নতুন জেনারেশনের জন্ম হয়। ঘনবসতির বাংলাদেশে কোভিডের সংক্রমণের মাধ্যমে কোভিডের নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট আসুক, সেটি নিশ্চয়ই আমরা চাইবো না। কোভিডের নামের সঙ্গে বাংলাদেশের নামটা যুক্ত হয়ে যাক, সেটা নিশ্চয়ই আমরা কেউ চাই না। লেখক : কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক
আপনার মতামত লিখুন :