রাহুল রাজ: [২] করোনাকালের কঠিন সময়ে সাফল্যের সঙ্গেই শেষ হলো বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। নিজস্ব প্রোডাকশনে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্ব সুপার লিগ সরাসরি সম্প্রচার করছে বেসরকারি টেলিভিশন টি-স্পোর্টস।
[৩] খুবই অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে দেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল টি-স্পোর্টস সাফল্যের সঙ্গেই কাজ করেছে। আয়ত্ত্বের মধ্যে থাকা প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সুপার লিগের খেলাগুলো সম্প্রচার করেছে টি-স্পোর্টস। বিদেশী কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা ছাড়া সম্পূর্ণ স্বদেশি আয়োজনে দক্ষতার সঙ্গে টি-স্পোর্টস সরাসরি খেলা সম্প্রচারের এই চ্যালেঞ্জে উতরে গেছে।
[৪] এই প্রসঙ্গে টি-স্পোর্টসের মহা-ব্যবস্থাপক তাসভীর-উল ইসলাম সেই সাফল্যের গল্প বলছিলেন। তার কথায় উঠে এসেছে সম্প্রচারের খুঁটিনাটি।
[৫] ১৮ ক্যামেরার বহুমূখী ব্যবহার
সম্প্রচারের প্রথম দিকেই আসে ক্যামেরার ব্যবহার। যত উন্নত ক্যামেরা, যত বেশি ক্যামেরা পর্দায় খেলা ততবেশি দৃষ্টিনন্দন। বোলারের রান-আপ কিংবা ব্যাটসম্যানের শট; সব নিখুঁত ভাবে দেখাতে প্রয়োজন উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা। টি-স্পোর্টস এই কাজটি করেছে ভালোভাবেই। শের-ই বাংলায় বসানো হয়েছিল ১৮টি ক্যামেরা। তার মধ্যে উইকেটে ছিল হাই কনফিগারেশনের চারটি ক্যামেরা। ডিআরএস প্রযুক্তি না থাকলেও এলবিডব্লিউ-রানআউট কিংবা কট বিহাইন্ডের রিপ্লে দেখানো হয়েছে স্পষ্টভাবে। যাতে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন আম্পায়াররাও।
[৬] ছিল ড্রোন ক্যামেরা
খেলায় ড্রোনের ব্যবহার এখন হরহামেশাই হয়। ঘরোয়া আসর হলেও টি- স্পোর্টস সম্প্রচারে ড্রোনও রেখেছিল। ড্রোন অপারেটর মুজিবুর রহমান জানান, এই ড্রোন দিয়ে স্পাইডার ক্যামেরার কাজও করা হয়। এর মাধ্যমে মাঠের খুঁটিনাটি হতে শুরু করে ক্রিকেটার উদযাপনসহ মুভমেন্ট দেখানো হয় ওপর থেকে। যাতে টিভি পর্দায় খেলাটি দেখায় আরও বর্ণিল।
[৭] বায়োবাবলেও ক্যামেরা
পুরো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করা হয়েছে বায়োবাবলের মধ্যে। ১২টি দলের ক্রিকেটার-স্টাফ ম্যাচ অফিসিয়াল হতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই ছিলেন জৈব সুরক্ষিত বলয়ে। নানা গল্প তুলে নিয়ে আসতে টি-স্পোর্টস ক্যামেরা পার্সন-উপস্থাপককেও রেখেছিল বায়োবাবলের মধ্যে।
[৮] দ্রুতসময়ে প্রস্তুতির চ্যালেঞ্জ
প্রথম পর্বের পর ১৯ জুন থেকে শুরু হয় সুপার লিগের খেলা। মাঝে হাতে সময় ছিল মাত্র দুদিন। এই অল্পসময়ের মধ্যে সম্প্রচারের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়েছে চ্যানেলটিকে। মাঠে ক্যামেরা-ক্যাবল বসানো, অল্পসময়ের মধ্যে নানা জিনিষ ক্রয় করা খুব কষ্টসাধ্য ছিল। আগের দিন রাত ৩টা পর্যন্ত সম্প্রচারের সঙ্গে জড়িতদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ডুবাই ভিত্তিক একটি সংস্থার মাধ্যমে। যাতে করে সেরাটাই দিতে পারেন সকলে।
[৯] তাসভীর আরো জানান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি নেওয়াটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। ক্যামেরা-ক্যাবল বসানো, কিছু জিনিষ কিনতে হয়েছে হঠাৎ করে। এ ছাড়া আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলাম। খেলা শুরুর আগের রাত ৩টা পর্যন্ত দুবাইয়ের একটি সংস্থার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ হয়। আসলে আমরা দিন রাত এক করে খেটেছি। তাই সম্ভব হয়েছে সুন্দরভাবে সম্প্রচারে।
[১০] ধারাভাষ্য নিয়ে ভাবনা
টি-স্পোর্টসে ধাভাষ্যকার হিসেবে বহুল পরিচিত ধারাভাষ্যকার শামীম চৌধুরী। তার সঙ্গে আছেন এক ঝাঁক তরুণমুখ। তাসভীর জানান, ধারাভাষ্যে তারা তরুণদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। মনোযোগ রাখছেন ভুল তথ্য যাতে না আসে এদিকে। সর্বোপরি ধারাভাষ্যের মাধ্যমে যাতে দর্শকরা আরও অনুপ্রাণিত হন সেদিকেই তাদের দৃষ্টি। ভবিষ্যতে খেলার ওপর বিবেচনা করে বিভিন্ন ভাষাতেও ধারাভাষ্যর ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র: রাইজিং বিডি