মারুফ হাসান : শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক একেএম হাফিজুর রহমান এর আদেশে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ আবু ত্ব-হাসহ তার সফরসঙ্গীদের জবানবন্দি শেষে আইনজীবীদের মাধ্যমে নিজ নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সন্তান বাড়ি ফেরায় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আবু ত্ব-হার মা আজেদা বেগম বলেন, আটদিন ঠিক মতো ঘুমাতে পারিনি। কী করে ঘুমাব, ছেলে হঠাৎ নিখোঁজ! কোথায় কী থেকে কী হচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছিলাম না। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে জীবিত ফিরে এসেছে, এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। আর যেন কোনো বিপদ-আপদ না হয়। আমরা খুশি, সরকারকে ধন্যবাদ।
নিখোঁজের পর ‘ফিরে আসা’ আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে নিরাপদে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার মামা আমিনুল ইসলাম।
এরপর আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা তাকে ফিরে পেয়েছি। এ জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেশবাসীর কাছে চির কৃতজ্ঞ যে, সবাই তার (আবু ত্ব-হা) প্রতি এতো ভালোবসা দেখিয়েছে। তার বিষয়ে সবাই দোয়া করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের পাশে থেকেছেন। আপনাদের সবার মঙ্গল হোক।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানসহ বাকিদেরকে স্ব-স্ব পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শুক্রবার বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, গত ১০ জুন, বৃহস্পতিবার রংপুর থেকে ঢাকার পথে রওনা হন আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ আব্দুল মুহিত, ফিরোজ আলম ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন। ঢাকার গাবতলী পৌঁছালে ত্ব-হার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে সেখান থেকে আবার গাইবান্ধার ত্রিমোহনীতে চলে যান তারা। সেখানে পূর্বপরিচিত বন্ধু সিয়ামের বাড়িতে অবস্থান করেন। এ সময় বন্ধু সিয়াম বাসায় ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, ওই বাড়িতে অবস্থানকালে ত্ব-হার ইচ্ছাতেই সবাই তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। কিছুদিন এভাবে আত্মগোপনে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। মূলত পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে ত্ব-হা আত্মগোপনে থাকতে চান বলে সঙ্গীদের জানান এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে বলেন। তার কথায় রাজি হয়ে বাকিরাও স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। তবে তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার দাবি করলেও এ ঘটনা রাষ্ট্র বা সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার কোনো ষড়যন্ত্র কি-না, তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ। সূত্র: জাগোনিউজ, আরটিভি, ঢাকাপোস্ট