রহমত আলী : [২] রাইড শেয়ারিং কর্মী রেদোয়ান রশীদ চৌধুরী (২৮) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে মোগলাবাজার থানা পুলিশ। শুক্রবার (১৪ মে) ভোরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মোগলাবাজার থানার অন্তর্গত সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মুহাম্মদপুর (গফুরের বান্দ) এলাকার একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
[৩] নিহত রেদোয়ান রশীদ চৌধুরী জকিগঞ্জ উপজেলার ৩নং কাজলসার ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামালপুর গ্রামের মৃত নোমান রশীদ চৌধুরীর একমাত্র ছেলে। সে বিগত এক বছর থেকে সিলেট নগরীর সোবহানীঘাট এলাকার চালিবন্দর সমতা-৭ এর নুরজাহান টাওয়ারে তার বোনের বাসায় থেকে রাইড শেয়ারিং করে আসছিল।
[৪] জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিটের দিকে রেদোয়ান রশীদ চৌধুরী বাইক নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফেরেনি। ওইদিন রাত ৩টার দিকে সে এসএমএসের মাধ্যমে জানায়, সে সুনামগঞ্জ রয়েছে, সকালে বাসায় ফিরবে। পরদিন তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে বন্ধ পাওয়ায় এবং সম্ভাব্য আত্মীয় স্বজনের বাসা বাড়িতে খোঁজে না পাওয়ায় সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী করেন তার দুলাভাই কাজী আব্দুর রহমান। সেই জিডির সূত্রধরে পুলিশ রেদোয়ানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্রেকিং করে সর্বশেষ অবস্থান মোগলাবাজার এলাকার হাজীগঞ্জের আশপাশ দেখতে পায়।
[৫] সে সুবাদে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ও রেদোয়ানের আত্মীয় স্বজন সেখানকার বাসিন্দাদের সহযোগিতায় খোঁজতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মুহাম্মদপুর (গফুরের বান্দ) নামক স্থানের একটি ডোবার উপরে রেদোয়ানের ব্যবহৃত হেলমেট দেখা যায়। তখন আশপাশে সবাই খোঁজতে শুরু করলে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ডোবার কচুরীপানার ভিতর রেদোয়ানের উপুড় হওয়া লাশ দেখা যায়।
[৬] খবর পেয়ে মোগলাবাজার থানার ওসি মোঃ শামসুদ্দোহা পিপিএম সরেজমিনে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে শুক্রবার ভোরে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
[৭] বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে নিহত রেদোয়ানের চাচাতো ভাই জেলা ছাত্রলীগ নেতা এম.এ.কে. চৌধুরী জাবেদ বলেন, রেদোয়ান খুবই সহজ সরল প্রকৃতির ছিলো। তার সাথে কারো কোন বিরোধ আছে বলে আমার জানা নেই। ধারণা করা হচ্ছে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য ছিনতাইকারীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
[৮] নিহত রেদোয়ানের দুলাভাই কাজী আব্দুর রহমান বলেন, রেদোয়ান নিখোঁজের পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে এবং অন্য নাম্বার থেকে আমিসহ আত্মীয় স্বজনের মোবাইলে একাধিক বার্তা ও কল এসেছে। আমরা আশাবাদী পুলিশ এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। আমরা লাশ দাফনের পর সিলেটের মোগলাবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করবো।
[৯] এ প্রসঙ্গে এসএমপির মোগলাবাজার থানার ওসি মোঃ শামসুদ্দোহা পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনা ছিনতাইয়ের বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :