সমীরণ রায়: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কষ্ট হবে জেনেও বাধ্য হয়েছি মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে।
[৩] তিনি দেশবাসীকে বলেন, আসুন, যে যেখানে আছি সেখান থেকেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করি।
[৪] দেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, মানুষের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। তাই দোকান-পাট, শপিং মলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখতে হচ্ছে। একই কারণে গণপরিবহন চলাচলের উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অগণিত মানুষের রুটি-রুজির ওপর আঘাত এসেছে। এই কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় ছিল না। উন্নত দেশগুলো পর্যন্ত করোনা রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেজন্য কোনোভাবেই রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেওয়া যাবে না।
[৫] প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ভাইরাস একদিকে যেমন অগণিত মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। ক্ষতিসাধন করছে মানুষের জীবন-জীবিকার। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই ভাইরাস। গত বছরের শেষদিকে আশান্বিত হয়েছিলাম যে বিশ্ববাসী বুঝি এই মরণঘাতী ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় ঢেউ সব পরিকল্পনা নৎস্যাৎ করে দেয়।
[৬] তিনি বলেন, ঈদ উদযাপন করবো, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। জনগণের প্রতি অনুরোধ: আপনারা আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন না। অনেকের কোনো বাহ্যিক লক্ষণ না থাকায় আপনি বুঝতে পারবেন না, পাশের ব্যক্তিটিই করোনাভাইরাস বহন করছে। এতে আপনি যেমন করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন, তেমনি নিকটাত্মীয় বা পাড়াপ্রতিবেশিকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন। বেঁচে থাকলে আসছে বছর আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবো। তাই ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
[৭] তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। এই ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু বলে প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন।
[৮] বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিত্তবান যাঁরা আছেন বা যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁদের প্রতি অনুরোধ, এই দুঃসময়ে দরিদ্র প্রতিবেশি, গ্রামবাসী ও এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার সাহায্য একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাঁদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে।
[৯] বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সম্পাদনা : রাশিদ